ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নির্যাতন, মাদকে সেরা শেরেবাংলা হল: জানেন না প্রোভোস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫২, ৮ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নির্যাতন, মাদকে সেরা শেরেবাংলা হল: জানেন না প্রোভোস্ট

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের ১০১১ কক্ষের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ফের আলোচনায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র লীগ।

আবরারের মৃত্যুর পর তার সহপাঠীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাদের নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ছাত্রলীগের ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে।

আবরার হত্যার পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি তুলেছেন, যেন সেখানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কিন্তু কেন? শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেন। অনিচ্ছা থাকার পরও তারা তাদের দলীয় কার্যক্রমে জোর করে সম্পৃক্ত করেন। কেউ এর বিরুদ্ধে কথা বললে, তাদের উপর নেমে আসে নির্যাতন। এজন্য তাদের টর্চার সেলও রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করছেন, ছাত্রলীগের নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ে উশৃঙ্খল থাকেন। তারা বিভিন্ন ধরনের মাদক নেন। তাদের মদ, ইয়াবা, গাঁজা সেবন বিশ্ববিদ্যালয়ে ওপেন সিক্রেট বিষয়।

ছাত্রলীগ নেতাদের কক্ষ মিনি বার বলেও উল্লেখ করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগে এ প্রতিবেদক শেরে বাংলা হলে ঘুরে ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ৭ অক্টোবর রাতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মুস্তাবা রাফিদ ও অমিত সাহা এই কক্ষে থাকতেন। ২০১১ এর মত একাধিক কক্ষ রয়েছে টর্চারের জন্য । তবে হলের ছাদেই বেশিরভাগ র‌্যাগিং ও পেটানোর ঘটনা ঘটতো।

শেরে বাংলা হলের নিরাপত্তা প্রহরী নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত এক বছরে ওই হলে তিন জন ছাত্রকে শিবির সন্দেহে মারধর ও পুলিশে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, শেরে বাংলা হলের ৩০০৪ নম্বর কক্ষে থাকেন ফারহান জাওয়ান। তার কক্ষকে মিনি বার বলা হতো। ২০০৪ ও ২০০৫ কক্ষকে বলা হয় ফুল বার। মেকানিক্যাল অনুষদের ছাত্র দিহানের কক্ষও মদের আখড়া বলে পরিচিত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানান, বহিরাগতরাও শেরে বাংলাসহ অন্যান্য হলে নেশা করার যাতায়াত করতেন।

টর্চারের ধরন:

টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, অবাধ্য ছাত্রদের ছাত্রলীগ নেতারা তাদের কক্ষে নিয়ে যেতেন। সেগুলোকেই মূলত টর্চার সেল বলা হয়। ক্রিকেট স্ট্যাম্প, হকি স্টিক দিয়ে সেখানে নির্যাতন করা হতো। আর হাত দিয়ে মারার ঘটনা শেরে বাংলা হলে একেবারেই সাধারণ ঘটনা ছিল।

অভিযোগের বিষয়ে শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট জাফরুল্লাহ খানের মন্তব্য, তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, ‘এসব অভিযোগ শিক্ষার্থীরা আমাকে জানাতে পারত।’


ঢাকা/নূর/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়