ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

বুয়েটের শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ, কঠোর কর্মসূচির চিন্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ২৯ অক্টোবর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বুয়েটের শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ, কঠোর কর্মসূচির চিন্তা

১০ দফা দাবি পূরণের বিষয়ে প্রশাসনের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার বুয়েটের শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের ১০ দফা দাবির মধ্যে দুটি ছাড়া বাকিগুলোর বিষয়ে প্রশাসনের দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। আমরা এ বিষয়ে চরম ধীর গতি লক্ষ করছি।

বুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমন্বয়ক অন্তরা তিথি বলেন, আমরা গত ১২ দিনে প্রশাসনের ইতিবাচক কোনো উদ্যোগ দেখিনি। আমরা র‌্যাগিংয়ের বিষয়ে স্যারদের কাছে রিপোর্ট করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। তারা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কিন্তু কমিটির কাজের কোনো অগ্রগতি আমরা দেখছি না।

তিনি বলেন, আমরা চাইব, বুয়েট প্রশাসন শিগগিরই আমাদের দাবিগুলোর বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। অন্যথায়, আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি আরো কঠোর কর্মসূচি দেব। তবে কী কর্মসূচি দেয়া হবে, তা এখনই বলতে চাচ্ছি না।

‘আমরা ভিসি স্যারের সঙ্গে বসার চেষ্টা করছি। তিনি যদি আমাদের প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারেন তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব,’ বলেন অন্তরা তিথি।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, মামলার চার্জশিটের ভিত্তিতে আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তির বিষয়ে প্রশাসনের উদ্যোগে ধীর গতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বিষয়েও এখন পর্যন্ত যোগাযোগ করা হয়নি। প্রশাসনের এ ভূমিকা আমাদের জন্য চরম উদ্বেগজনক।

তারা বলেন, আমরা দাবি আদায় না পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরব না। এ বিষয়ে জানাতেই আমরা সাংবাদিকদের ডেকেছি। খুব শিগগিরই প্রশাসনের সঙ্গেও বসব।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-

খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সিসি টিভি ফুটেজ ও জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে শনাক্ত হওয়া খুনিদের প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

শনাক্ত হওয়া খুনিদের আজীবন বহিষ্কার নিশ্চিত করতে হবে।

মামলার সব খরচ এবং আবরারের পরিবারের সব ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে।

দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব‌্যুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করার জন্য বুয়েট প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। বুয়েট প্রশাসনকে সক্রিয় থেকে সমস্ত প্রক্রিয়া নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং নিয়মিত ছাত্রদের জানাতে হবে।

অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিশিয়াল নোটিশ দিতে হবে।

রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে বুয়েটে হলে হলে ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করে রাখা হয়েছে। জুনিয়র মোস্ট ব্যাচকে সব সময় ভয়ভীতি প্রদর্শনপূর্বক জোর করে রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংয়ে নেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে যেকোনো সময় যেকোনো হল থেকে সাধারণ ছাত্রদের বিতাড়িত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে হলে হলে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। এসব নিরসনে দৃশ্যমান উদ্যোগ নিতে হবে।

আবাসিক হলগুলোতে র‌্যাগের নামে এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সব ধরনের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনে জড়িত সবার ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। একই সাথে আহসানউল্লা হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলে হওয়া আগের ঘটনাগুলোতে জড়িত সবার ছাত্রত্ব করতে হবে।

এ ধরনের আগের ঘটনা প্রকাশ এবং পরবর্তীতে ঘটা যেকোনো ঘটনা প্রকাশের জন্য একটা কমন প্ল‌্যাটফর্ম (কোনো সাইট বা ফর্ম) থাকতে হবে। নিয়মিত প্রকাশিত ঘটনা রিভিউ করে দ্রুততম সময়ে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এই প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বুয়েটের বিআইআইএস অ‌্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে হবে। পরবর্তী ১ মাসের মধ্যে কার্যক্রম পূর্ণরূপে শুরু করতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে সবগুলো হলের প্রত্যেক ফ্লোরের সবগুলা উইংয়ের দুই পাশে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে।

রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হওয়ায় শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করতে হবে।


ঢাকা/ইয়ামিন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়