ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

সাংবাদিকরা শুনানিতে না আসায় একতরফা প্রতিবেদন

মিথুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ১১ জুন ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাংবাদিকরা শুনানিতে না আসায় একতরফা প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা উত্তর সিটি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির শুনানিতে সাংবাদিকরা অনুপস্থিত থাকায় একতরফা প্রতিবেদন দিতে যাচ্ছে তদন্ত কমিটি।

 

বৃহস্পতিবার পঞ্চম দফায় সাংবাদিক-পুলিশ এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের মুখোমুখি সাপেক্ষে শুনানি করার উদ্যোগ নিয়েছিল কমিটি। এ শুনানিতে অন্যরা উপস্থিত থাকলেও সাংবাদিকরা অনুপস্থিত থাকায় এ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

শুনানিতে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিক সুজয় মহাজন বলেন, ‘আমার বক্তব্য আমি আগের শুনানিতেই তুলে ধরেছি। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা এবং নাজেহালের বিষয়ে থানায় জিডির কপিও কমিটির কাছে উপস্থাপন করেছিলাম। কিন্তু আজ পেশাগত দায়িত্ব পালনে থাকায় এবং দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ে কমিটির শুনানিতে অংশ নিতে পারিনি।’

 

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য বলেন, সাংবাদিকরা শুনানিতে এলে প্রকৃত ঘটনার বিষয়ে দুইপক্ষের বক্তব্য যাচাইয়ের সুযোগ ছিল। একঘণ্টা অপেক্ষা করেও কোনো সাংবাদিকের দেখা পাননি। এক্ষেত্রে প্রকৃত ঘটনা খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে যাবে। যা পেয়েছেন, তাই তদন্ত প্রতিবেদন আকারে কমিশনকে দেওয়া হবে।

 

তদন্ত কমিটির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শুনানিতে সাংবাদিকরা অনুপস্থিত থাকলেও ঢাকা সিটির ৩০টি কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করা সংশ্লিষ্ট থানার ওসি, এসআই, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা সাংবাদিকদের সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেননি বা নাজেহাল করেননি। বরং তাদের সহযোগিতা করেছিলেন। ভোটকেন্দ্রে অনিয়ম হয়নি। পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচন কর্মকর্তারাও সুর মিলিয়েছেন। তারাও বলেন,  ভোটকেন্দ্রে তারা স্বচ্ছতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। সব কিছু স্বাভাবিক ছিল।

 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সাংবাদিক-পুলিশ-নির্বাচন কর্মকর্তাদের ১০ জন করে মোট ৩০ জনকে বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ডাকা হয়। তদন্ত কমিটির কাছে সংশ্লিষ্টরা দু’ধরনের বক্তব্য দেওয়ায় কারণে সংশ্লিষ্টদের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নিয়েছিল কমিটি। কিন্তু সাংবাদিকরা তদন্ত কমিটির ডাকে সাড়া না দেওয়ায় একতরফা রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

 

গত ২৮ এপ্রিল সিটি করপোরেশনে ভোটের দিন সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা ও নাজেহাল করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনা তদন্তে ঢাকার ৩০টি কেন্দ্র চিহ্নিত করে ইসি। এসব কেন্দ্রে বাধা পেয়েছেন এমন সাংবাদিকদের শুনানিতে ডাকা হয়। সাংবাদিকদের শুনানির আগে তদন্ত কমিটির কাছে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পুলিশ, পর্যবেক্ষক ও নির্বাহী হাকিমরা অংশ নিয়ে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে ভোটের পরিবেশ স্বাভাবিক ছিল। সাংবাদিককে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে সাংবাদিকরা তদন্ত কমিটির কাছে উল্টো তথ্য দিয়েছেন। ভোটকেন্দ্রে নির্যাতিত সাংবাদিকরা তদন্ত কমিটির কাছে মৌখিক ও লিখিতভাবে বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনা ও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার ঘটনা বর্ণনা দিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

 

ভোটের পর ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহা. আনিছুর রহমানকে আহ্বায়ক করে নির্বাচন পরবর্তী একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন। এ কমিটি ভোটগ্রহণের দিনের পরিবেশ সম্পর্কে অবহিত হতে প্রথমে প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাচনী পর্যবেক্ষক এবং সর্বশেষ হয়রানির শিকার হওয়া সাংবাদিকদের মতামত শুনেছেন।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ জুন ২০১৫/মিথুন/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়