ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পূজায় শৈশবের মতো আবেগ অনুভব করি না: রামেন্দু মজুমদার

রামেন্দু মজুমদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০৬, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পূজায় শৈশবের মতো আবেগ অনুভব করি না: রামেন্দু মজুমদার

লক্ষীপুরের দত্তপাড়া আমাদের গ্রাম। আমরা থাকতাম লক্ষীপুর শহরে। সর্বজনীন পূজার সময় গ্রামের বাড়িতে যেতাম। নিয়ম করেই যেতাম। গ্রামের মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতি আছে। বাবা অথবা বড় ভাইয়ের হাত ধরে প্রতিমা দেখতে যেতাম। ছেচল্লিশের আগের সময়কার কথা বলছি, আমাদের তেমন বিলাসিতা ছিল না। আমরা বছরে দুইবার নতুন জামা পেতাম- পয়লা বৈশাখে এবং সর্বজনীন পূজায়।

আমাদের পছন্দ-অপছন্দের কোনো বিষয় ছিল না। দর্জি হয়তো বাড়িতেই পোশাক দিয়ে যেতেন, না হয় বড় ভাই পোশাক কিনে এনে দিতেন। যা পেতাম তাই নিয়েই খুশি থাকতাম। পূজায় আমাদের বাড়িতে অনেক লোক সমাগম হতো। বাড়ির কাজ নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে পরতেন মা।

পূজার একটা স্মৃতি মনে পড়ে, বাড়ির কম বয়সী মেয়েরা বাড়ির উঠানে আল্পনা আঁকত। মাকে কখনো আঁকতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। মহালয়ার দিন থেকে বাড়িতে অনেক লোক আসা-যাওয়া করতেন। শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক বাড়িতে আসতেন তা নয়- মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনও আসতেন।

ছেচল্লিশ-এ যখন দাঙ্গা হলো, আমরা সেই দাঙ্গায় আক্রান্ত হয়েছিলাম বাড়ি থেকে লক্ষীপুর আসার সময়। তারপর থেকে পূজার সময় গ্রামের বাড়িতে যাওয়া কমে গেছে। তারও পরে একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। লক্ষীপুরের দুটি সর্বজনীন পূজার কথা মনে আছে; একটা কালীবাড়িতে আর একটা আখড়াতে।

একটা সময় লক্ষীপুর ছেড়ে বিভিন্ন সময় নানা জায়গায় থেকেছি। পরে ঢাকায় চলে আসি। বয়সও বাড়তে থাকে। এরপর আমার কাছে পূজার গুরুত্ব কমে গেছে। মানে একটা সময় পর্যন্ত আমি পূজা অনুভব করতাম, তারপর ক্রমে একাত্মতা কমে এসেছে।

এখন পূজায় ঢাকাতেই থাকা হয়। খুব একটা ঘুরতে বের হই না। দু’একটি মণ্ডপে যাই। শৈশবের মতো অত আবেগ বা আবেদন আর অনুভব করি না।

অনুলিখন : স্বরলিপি

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭/শান্ত/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়