ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নতুন দুটি শ্রম আদালত হবে : মুজিবুল হক

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নতুন দুটি শ্রম আদালত হবে : মুজিবুল হক

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু (ফাইল ফটো)

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : শ্রমজীবী মানুষের অধিকার নিশ্চিতকরণ, রক্ষা ও ন্যায় বিচার পাওয়ার সুবিধার্থে দেশে নুতন করে আরো দুটি শ্রম আদালত স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।

বাংলাদেশে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তিনি এ কথা জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আরো দুটি লেবার কোর্ট (শ্রম আদালত) বাড়াচ্ছি। যাতে শ্রমিকরা ন্যায় বিচারের সুযোগ পান। নতুন দুটি লেবার কোর্টের একটি হবে সিলেটে, অন্যটি রংপুরে।’

বর্তমানে দেশে মোট সাতটি শ্রম আদালত আছে, যার মধ্যে ঢাকায় তিনটি। কোর্টগুলো একসঙ্গে আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কোর্টের জুরিসডিকশন (আওতা) নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর- এভাবে আলাদা করতে পারি কিনা, এ রকম চিন্তা-ভাবনা আমাদের আছে। অর্থাৎ কোর্ট স্থানান্তর করা। গাজীপুরের শ্রমিকের জন্য ঢাকায় এসে বিচার পাওয়া খুব কঠিন জিনিস।’

ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কী কথা হয়েছে- জানতে চাইলে মুজিবুল হক বলেন, ‘তারা  মূলত গার্মেন্টস কারাখানা পরিদর্শনের অবস্থা, শ্রম অধিকার, কারখানার সার্বিক পরিবেশ, শ্রম আইন সংশোধন, ট্রেড ইউনিয়ন, ইপিজেড শ্রম আইন প্রণয়ন, নারীদের ক্ষমতায়নের বিষয়ে অগ্রগতি ও বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা ইইউ প্রতিনিধিদলকে বিস্তারিত জানিয়েছি। আমরা বলেছি, কারখানা পরিদর্শনের কাজ শেষ করা হয়েছে। অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কাজ শেষ হয়েছে। আমাদের নিজস্ব সংস্কার সেল আছে, সেখানে বৈঠক হবে, তারপর আমরা বাকি কাজ করব। তবে গার্মেন্টস পণ্যের রপ্তানি মূল্য বাড়াতে তাদের প্রতি আমরা আহ্বান জানিয়েছি।’

‘শ্রম আইন সংশোধনসহ সর্বশেষ অবস্থাও আমরা তাদের জানিয়েছি। এখন সর্বশেষ শ্রম আইনের আদলে ইপিজেডের জন্য আলাদা শ্রম আইন করা হচ্ছে, এটি আগে ছিল না। সেটি সংসদে গিয়েছে। এর ওপর আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। সেজন্য আমরা নজিরবিহীনভাবে সেটি পার্লামেন্ট থেকে প্রত্যাহারের পর পরিমার্জন করে আবারও পার্লামেন্টে পাঠিয়েছি। এসব অগ্রগতি আমরা তাদের সামনে তুলে ধরেছি।’

তবে ইপিজেড চালু হওয়ার শুরুতেই ট্রেড ইউনিয়ন করা যাবে না বলে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেখানে ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন হয়েছে- বলেও জানান মন্ত্রী।

মুজিবুল হক জানান, শ্রম আইন সংশোধনসহ বাংলাদেশের শ্রম খাত নিয়ে আইএলওর কাছে একটি খড়সা পাঠানো হয়েছিল।তারা সেটির ওপর পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংসদের আগামী অধিবেশনে সংশোধন করতে পারব বলে আশা করছি। এখন যে ব্যবস্থা আছে, তাতে কোনো কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করতে গেলে ৩০ শতাংশ শ্রমিকের সমর্থন লাগবে। এটি আমরা কমাচ্ছি। চারটি স্লাবে (স্তর) কমানো হবে।

তিনি বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনার আগে দেশে পোশাক খাতে ১২০টি ট্রেড ইউনিয়ন ছিল, এখন ৭০০টিতে পৌঁছেছে। আরও কয়েক শত ইউনিয়ন গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে।

মন্ত্রী দুঃখ করে বলেন, ‘আইএলও চায় ইউরোপীয় স্ট্যান্ডার্ড (মানদণ্ড)। সেটি কি আমাদের দেশে সম্ভব! আজ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলকে আমাদের কর্মকর্তারা বলেছেন, একজন মালিক ঢাকা থেকে কারখানা স্থানান্তর করে নিয়েছেন ঢাকার বাইরে। কোটি কোটি টাকা লেগেছে। আপনাদের ক্রেতারা তো মূল্য কমিয়েছে। আমরা যৌক্তিক মূল্য চাই। এ বিষয়ে আপনাদের ক্রেতাদের অনুরোধ করুন।’

নারীদের ক্ষমতায়ন বিষয়ে জানতে চাইলে মুজিবুল হক বলেন, ‘বিষয়টি কত দূর এগিয়েছে, তা জানিয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে তাদের কাছে তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের সচিব যেহেতু নারী, তিনি এ বিষয়ে সঠিকভাবে উত্তর দিয়েছেন।’

এর আগ ইইউ সংসদীয় প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে শ্রম কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর সভাকক্ষে তার সঙ্গে দেখা করেন। ১১ সদস্যবিশিষ্ট এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন জেন ল্যাম্বার্ড। এ সময় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আফরোজা খানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/নঈমুদ্দীন/রাপা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়