ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাবুসোনা হত্যা: যুক্তিতর্কের শেষদিনে মর্মস্পর্শী দৃশ্য

নজরুল মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ২২ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাবুসোনা হত্যা: যুক্তিতর্কের শেষদিনে মর্মস্পর্শী দৃশ্য

বাঁ থেকে- রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবুসোনা, স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ও প্রেমিক শিক্ষক কামরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর: আলোচিত রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবুসোনা হত্যা মামলার রায় আগামী ২৯ জানুয়ারি।

এই হত্যা মামলায় বাদী ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে যুক্তিতর্ক শেষে সোমবার আদালতের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এ বি এম নিজামুল হক রায় ঘোষণার এই দিন ধার্য্য করেন। 

যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষদিনে সোমবার শোকে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে আদালত কক্ষ। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুল মালেক সাক্ষীদের জবানবন্দী, জব্দকৃত আলামত এবং বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত প্রদর্শন করে সহকর্মী বাবুসোনার মৃত্যুর ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আদালত কক্ষে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। আদালত কক্ষে উপস্থিত নিহত আইনজীবী বাবুসোনার ছোট ভাই ও দু‘বোনও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুল মালেক জানান, মামলায় ৩৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়েছে। গত অক্টোবর মাসের ৩০ তারিখ এই হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। এর আগে গত ২১ অক্টোবর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরুর আদেশ দেন এ আদালতের বিচারক।

যুক্তিতর্ক শুরুর আগে কড়া পুলিশী প্রহরার মধ্য দিয়ে এই হত্যা মামলার একমাত্র বেঁচে থাকা আসামি স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপাকে আদালতে হাজির করা হয়। যুক্তিতর্ক চলাকালে রংপুর আইনজীবী সমিতির শতাধিক আইনজীবী সদস্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল মালেককে সহযোগিতা করেন শাহ মো: নয়ন্নুর রহমান টফি, অ্যাডভোকেট উৎপল আদনান ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম তুহিন। অপরদিকে আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্র নিযুক্ত) আইনজীবী বসুনিয়া মো. আরিফুল ইসলাম স্বপন।

গত বছরের ২৯ মার্চ রাতে বাবুসোনাকে ১০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশ তাজহাট মোল্লাপাড়ায় প্রেমিক শিক্ষক কামরুলের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে ৩ এপ্রিল মধ্যরাতে বাবুসোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব আটক করে। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং লাশের অবস্থান সম্পর্কে তাদের জানান। সেই সূত্র ধরে ওই দিন রাতে মোল্লাপাড়ার একটি বাড়ির মেঝে খুঁড়ে নিহত আইনজীবী বাবুসোনার গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় পুলিশ বাবুসোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দিপা, প্রেমিক শিক্ষক কামরুল ইসলাম, বাবুসোনার সহকারী মিলন মোহন্ত, ছাত্র মোল্লাপাড়া এলাকার সবুজ ইসলাম ও রোকনুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। নিহত বাবুসোনা‘র ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক এ ঘটনায় বাদী হয়ে রংপুর কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।




রাইজিংবিডি/রংপুর/২২ জানুয়ারি ২০১৯/নজরুল মৃধা/টিপু/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়