রান উৎসবের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাল ইংল্যান্ড
ক্রীড়া ডেস্ক: জস বাটলারের সেঞ্চুরির জবাব সেঞ্চুরি দিয়ে দিয়েছিলেন ফখর জামান।
রান উৎসবের ম্যাচে ইংল্যান্ডের রানের পাহাড় টপকে যাওয়ার পথেই ছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষটায় দারুণ লড়াইয়ে ইংল্যান্ড ম্যাচ জিতেছে অল্প রানে। সাউদাম্পটনে আগে ব্যাটিং করে ৩ উইকেটে ৩৭৩ রান তোলে ইংল্যান্ড। জবাবে ৭ উইকেটে ৩৬১ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস। ১২ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টি জিতে নিল এউইন মরগ্যানের দল। প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পন্ড হয়েছিল।
ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে বড্ড বড় ভুল করে বসেছিল পাকিস্তান। ব্যাটিং স্বর্গ উইকেটে বোলাররা শুরুতেই ব্রেক থ্রু দিতে ব্যর্থ। দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো অনায়েস রান তুলেছেন। হাফ সেঞ্চুরির পর বেয়ারস্টো (৫১) ফিরে গেলেও রয় সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ভালোভাবেই। কিন্তু ১৩ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয় ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে। ৯৮ বলে ৮৭ রান করেন রয়। ৬ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকান তিনি।
ব্যাটিংয়ে পাঁচে নেমে মূল ঝড়টা তোলেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান জস বাটলার। ৫০ বলে সেঞ্চুরি তুলে ইংল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন বাটলার। মাত্র ৫৫ বলে ৬ চার ও ৯ ছক্কায় বাটলার তোলেন ১১০ রান। চতুর্থ উইকেটে বাটলার ও মরগ্যান অবিচ্ছিন্ন ১৬২ রানের জুটি গড়েন। ইংল্যান্ড বড় পুঁজি পায় এ জুটির ওপর ভর করে। অধিনায়ক মরগ্যানের ব্যাটও উত্তাপ ছড়ায়। ৪৮ বলে ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৭১ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। দলের টেস্ট অধিনায়ক জো রুটের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ বলে ৪০ রান।
মোহাম্মদ আমিরকে ছাড়া পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ ছিল ‘নিরামিষ’। প্রত্যেক বোলার ছিলেন বেহিসেবি। শাহীন শাহ আফ্রিদি ১০ ওভারে ৮০ রানে নেন ১ উইকেট। হাসান আলী ১ মেডেন পাওয়ার পরও ১০ ওভারে খরচ করেন ৮১ রান। উইকেট পেয়েছেন ১টি। লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ ৭ ওভারে ব্যয় করেন ৬০ রান। ইমাদ ওয়াসিম ১০ ওভারে দিয়েছেন ৬৩ রান। ব্যাটসম্যানদের আধিপত্যে বলের লাইন লেন্থ মিস করেন সফরকারীরা।
লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানের দুই বাঁহাতি ওপেনার ছিলেন উজ্জ্বল। ৯২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন ইমাম-উল-হক ও ফখর জামান। আগ্রাসী ব্যাটিং করা ফখরের সহায়ক ভূমিকা পালন করেন ইমাম। ৪৪ বলে ৩৫ রান করে মঈন আলীকে ফিরতি ক্যাচ দেন ইমাম। অন্যপ্রান্তে ফখর ৩৯ বলে পৌঁছান ৫০ রানে এবং শতরানে পৌঁছান ৮৪ বলে।
দ্বিতীয় উইকেটে বাবর আজমকে সঙ্গে নিয়ে ১৩৫ রানের জুটি গড়েন ফখর। এ জুটিতে ইংল্যান্ডকে পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তান। সেঞ্চুরির পর আরও আগ্রাসী ব্যাটিং করেন ফখর। ইংল্যান্ড জানত তাকে ফেরালেই ম্যাচে ফেরা সম্ভব। দলের হয়ে কাজটা করে দেন ক্রিস ওকস। ডানহাতি পেসারের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল চালাতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ফখর। রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় ইংল্যান্ড। ১০৬ বলে ১২ চার ও ৪ ছক্কায় ১৩৮ রান করেন ফখর, যা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের যেকোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ।
সঙ্গী হারানোর পর বাবর আজম বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫২ বলে ৫১ রান করেন তিনি। আসিফ আলী ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেললেও দলের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত উইকেটে টিকে ছিলেন সরফরাজ। কিন্তু তার ৪১ রানের ইনিংসের পরও জয় পায়নি পাকিস্তান।
ইংল্যান্ডের বোলাররাও ব্যাটসম্যানদের হাতে তুলোধুনো হয়েছেন। কিন্তু শেষটা ভালোভাবেই রাঙিয়েছেন তারা। উইলি ৫৭ রানে এবং প্ল্যাঙ্কেট ৬৪ রানে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন।
ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন জস বাটলার।
আগামী মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে ব্রিস্টলে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ মে ২০১৯/ইয়াসিন
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন