ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সারা বছরই আমার বন্ধু দিবস : বুবলি

আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৪ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সারা বছরই আমার বন্ধু দিবস : বুবলি

শবনম বুবলি

বন্ধু দিবস খুবই সুন্দর একটি দিন! কিন্তু বরাবরই আমি বলে এসেছি, একটি দিন এতটা বিশেষ হতে পারে না। কারণ এই দিনটি খুব ঘটা করে পালন করলাম কিন্তু বাকি দিনগুলো ভুলে গেলাম- সেটা যেকোনো দিবসই হোক না কেন কাম্য নয়।  বিশেষ করে বন্ধু দিবসের কথা যদি বলি- সারা বছরই আমার বন্ধু দিবস।

আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু পরিবার। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পার করেছি। স্কুল জীবনে গার্লস স্কুলে মর্নিং শিফটে পড়েছি। কলেজ জীবনও কেটেছে উইম্যান কলেজে। স্কুল-কলেজে পড়াকালীন ক্লাশ করতাম আবার বাসায় ফিরে আসতাম। কিন্তু আলাদাভাবে বান্ধবীদের সঙ্গে সেভাবে সময় দেয়া, আড্ডা দেয়া হয়ে উঠেনি। অনার্সে পড়াকালীন নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। এখন এমবিএ করছি, সিনেমাও করছি। যে কারণে পড়াশোনা বা কাজের বাইরে সেভাবে বন্ধু-বান্ধব গড়ে ওঠেনি।

আমরা তিন বোন এক ভাই। ওদের সবার সঙ্গে আমি ফ্রি। ভাই-বোনদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া, মজা করা আগেও করেছি এখনো করি। এখানে একটা বিষয় বলে রাখি— আব্বু এখনো আমাদের ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করেন। কিন্তু আব্বু-আম্মুর সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা খুবই বন্ধুত্বপরায়ণ। যখন শাসন করার শাসন করেন, যখন ভালোবাসার ভালোবাসেন। এখন কাজের বাইরে একটু সময় পাওয়া মানেই পরিবারের সঙ্গে থাকা। ভালো-মন্দ সবসময়ই পরিবার আমার পাশে ছিল, আছে। সবকিছু মিলিয়ে পরিবারই আমার সবচেয়ে বড় বন্ধু। আমার মনে হয়— পরিবারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হওয়াটা সবচেয়ে জরুরি। আমি মনে করি, এটা সবার জন্যই প্রয়োজন।

 মায়ের সঙ্গে বুবলি

পরিবারের সঙ্গে অনেক স্মৃতি- প্রুতিটি মানুষের ক্ষেত্রে এটা হওয়াই স্বাভাবিক। আমার বোনদের সঙ্গে যেহেতু বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সেহেতু তাদের সঙ্গে অনেক মজার স্মৃতি রয়েছে। এখন আমরা যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও সাপ্তাহিক ছুটির সময় বোন ও দুলাভাইদের সঙ্গে আড্ডা দিই। আমার ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মনে আছে। আমাকে একটু আগে স্কুলে পাঠানো হয়েছিল। যদিও স্কুলে ভর্তি হইনি কিন্তু আম্মু-আব্বু স্কুলে নিয়ে যেতেন। স্কুলের পরিবেশের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য। এসময় বড় আপুরা হাউজ টিউটরের কাছে পড়তেন। ওরা যখন পড়ত তখন বাসাজুড়ে দৌড়াদৌড়ি করতাম। আপুরা যেখানে পড়ত সেখানেও মাঝে মাঝে গিয়ে দেখতাম ওরা কী করে। যখন দেখতাম ওরা ঠিকমতো পড়ছে না, টিচার ওদের বকা দিচ্ছে, তখন আম্মুর কাছে এসে সব বলে দিতাম। তারপর আম্মু গিয়ে আপুদের বকে দিত, বলত- তোমরা নাকি পড়ছো না, গল্প করছো!

টিচার চলে যাওয়ার পর যখন দেখতাম ওরা হোমওয়ার্ক করছে না তখন আবার আম্মুর কাছে বিচার দিতাম। এরপর আপুরা আমাকে ধরে বলতো— ‘আমরা একটু গল্প করলে তুমি কেন আম্মুকে বলে দাও? এরপর যদি আম্মুকে এসব কথা বলে দাও তাহলে তোমাকে আমরা বকা দিবো।’ পরে এসব কথাও আম্মুকে বলে দিতাম। তারপর আম্মু আবার আপুদের ডেকে নিয়ে বকা দিতো। এসব স্মৃতি মনে পড়লে নস্টালজিক হয়ে যাই। এসব স্মৃতি নিয়ে এখনো আপুরা গল্প করে।

আমার মেজ বোনের সঙ্গে একটি ঘটনা শেয়ার করছি- আমি তখন টিনএজ। এইট কিংবা নাইনে পড়ি। আপু তখন কলেজে পড়ে। কোনো একটি বিষয় নিয়ে আমরা খুব তর্ক করছিলাম। এক পর্যায়ে আপু বলল, ‘পাগল নাকি’। আমি জবাবে বললাম, ‘তুমি তো শিওর না আমি পাগল কিনা। সেজন্য প্রশ্ন করলা। কিন্তু আমি শিওর তুমি পাগল।’ এত ছোটবেলায় এতটা যুক্তি দিয়ে কথা বলার এসব ঘটনা নিয়ে এখনো বাসায় আলোচনা হয়। এই ধরনের খুনসুটি এখনো হয়। আমার মনে হয় না, এরচেয়ে ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক বাইরে কারো সঙ্গে আমার হতো। ওরা আসলে আমার দুই বোন না, বরং বড় দুই ভাইয়ের মতো। এখনো সবসময় শাসন করে, ভালোবাসে।

শ্রুতিলিখন: আমিনুল ইসলাম শান্ত


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ আগস্ট ২০১৯/শান্ত/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়