ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

‘শিল্পীরা কি শুধু হাওয়া খেয়ে বাঁচবে?’

বিনোদন ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৮ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘শিল্পীরা কি শুধু হাওয়া খেয়ে বাঁচবে?’

‘বলছিলাম যে, বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পী এবং সংশ্লিষ্ট মিডিয়াকর্মীদের কি অবস্থা? প্রণোদনা জাতীয় কিছু নেই? ক্ষুধার উন্মাদনাও নেই? কাউকে তো কিছু চাইতেও দেখছি না। ইশারা ইঙ্গিতে দু’ একজন বলার চেষ্টা করলে ওই হালকার ওপর ঝাপসা, পাছে কে কি মনে করল! তাহলে তো মান-সম্মান গেল বলে! অবশ্য আমাদের দেশে এই পেশার লোকদের আদৌ কেউ সম্মান করে কিনা সে বিষয়েও আমি যথেষ্ট সন্দিহান’—করোনার সংকটকালে মিডিয়াকর্মীদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এসব কথা বলেন দুই পর্দার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি।

‘সামাজিক দায়িত্ব, সমাজ সচেতনতা এগুলোতে অংশগ্রহণ না করলে কিন্তু আবার দারুণ অপরাধ, আবার করলেও অপবাদ। কোটি টাকা বাজেটের কোনো সরকারি/বেসরকারি প্রজেক্টে অভিনয়শিল্পীকে ফ্রি সচেতনতামূলক বাণী কিন্তু দিতে হবে, না হলে শিল্পীর সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকল কই। কোটি টাকার হিসাবে তার বাজেট একেবারেই রাখা যাবে না। বাকি টাকাটা হাওয়ায় উড়ে যাবে। আর শিল্পীরা শুধু ওই হাওয়া খেয়ে বাঁচবে!’—বলেন জ্যোতি।

প্রতিষ্ঠিত শিল্পী কিংবা অখ্যাত শিল্পী অথবা টেকনিশিয়ান। সবাই দৈনিক মজুরিতে কাজ করে থাকেন। তফাৎ হলো—কারো পারিশ্রমিক ৩০০ টাকা, কারো ৩ হাজার টাকা। এই মানুষগুলোর কাজ এখন বন্ধ। বিষয়টি উল্লেখ করে জ্যোতিকা জ্যোতি বলেন, ‘আমি তো যদ্দুর জানি তাদের আয়ের একমাত্র উৎস দিন হিসেবে কাজ করে যে টাকা পায় সেটাই। দিনমজুরি না বলে সমাজ যেটার নাম দিয়েছে সম্মানী। ওই সম্মানী তো এখন বন্ধ, যেহেতু শুটিং বন্ধ। দেশের যে পরিস্থিতি সামনে আসছে সে সম্মানী পেতে পেতে আরো কয় মাস, বছর লাগে সেটা অনিশ্চিত। তো দিন এনে দিন পার করা এই মানুষগুলোর ভবিষ্যত কী?’

অসচ্ছল শিল্পীদের সহযোগিতার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলেছে অভিনয়শিল্পী সংঘ। কিন্তু সরকারের এই করুণার অর্থ একজন শিল্পী কেন নেবেন? এই প্রশ্ন রেখে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘টেলিভিশন শিল্পী সংঘ থেকে মেসেজ এসেছে কোনো দুস্থ শিল্পী আগ্রহী থাকলে সরকারি সাহায্যর জন্য তথ্যমন্ত্রণালয়ে তার নাম পাঠানো হবে। সংঘ তার দায়িত্ব পালন করেছে। কিন্তু সরকারের এই দুই-চার হাজার বা দুই-চার লাখ টাকার সাহায্য দিলেইবা আমি নেব কেন? ক্ষুধার পাশাপাশি আত্মসম্মানও তো আছে শিল্পীর। করোনাকালের এই অল্প, অনিশ্চিত সরকারি করুণায় জীবন চলবে কি? যারা সচ্ছল তারা চাইবেন না? বসে খেয়ে তো রাজার ভাণ্ডারও একদিন ফুরায়, আপনি তো শুধু একটি অসচ্ছল, দরিদ্র ইন্ডাস্ট্রির একজন কর্মী মাত্র!’

সব শিল্পীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে জ্যোতি বলেন, ‘একজন শিল্পী হিসেবে আমি আমার প্রাপ্য অধিকার চাই। হাওয়া খেয়ে বা বিশেষ দিবসে বিশেষ কয়েকজনের চা-চক্রের দাওয়াতে গিয়ে আমার পেট ভরে না। আর আত্মসম্মান বিকিয়ে করুণা নিয়েও আমার শান্তি আসে না। নিজের পেশাগত অধিকার ও দেশের শিল্প-সংস্কৃতি রক্ষায় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি নিশ্চিত আমার মতো এমন শতশত আছেন, আওয়াজ তুলুন। নিজের জীবন ও সম্মান রক্ষা করুন।’

 

ঢাকা/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়