ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘বিয়ের পর প্রথম ঈদ হলেও এখন বেঁচে থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ’

আমিনুল ইসলাম শান্ত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ২৪ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
‘বিয়ের পর প্রথম ঈদ হলেও এখন বেঁচে থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ’

শখ ছিলো নাচের। প্রশংসিত হলেন বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে। কিন্তু তার অভিনীত প্রথম নাটক ‘ইউটার্ন’ প্রচারিত হলে ভাগ্যরেখা পাল্টে গেল। এরপর নাচ কিংবা মডেলিং নয়, অভিনয়েই ব্যস্ত হয়ে উঠলেন সাবিলা নূর। করোনার কারণে স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি তিনি।  সব শুটিং বাতিল। এদিকে বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে এটিই সাবিলার প্রথম ঈদ। চলুন জেনে নেই, করোনাকালে ঈদ নিয়ে তার ভাবনা।

রাইজিংবিডি: বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে প্রথম ঈদ। নিশ্চয়ই অনেক পরিকল্পনা ছিল…

সাবিলা নূর: হ্যাঁ। স্বাভাবিক কারণেই অনেক পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কল্পনাই শুধু রইল। পরি উড়ে গেছে আকাশে। ঈদের দু’দিন আগ পর্যন্ত শুটিং করার কথা ছিল। সেভাবেই শিডিউল দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, নেহালকে নিয়ে ঈদের শপিং করব। পরিবারের সবার জন্য দু’জনে মিলে কেনাকাটা করব। কিন্তু তা আর হলো না। এই পরিস্থিতিতে বাইরে গিয়ে শপিং করার প্রশ্নই ওঠে না। ঈদের দিন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা করারও পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সেটাও বাতিল। পুরোপুরি বাসায় কাটবে এবারের ঈদ। এই মুহূর্তে বেঁচে থাকাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেঁচে থাকলে পরের বছর কিংবা তার পরের বছর ঈদ উদযাপন করা যাবে।

রাইজিংবিডি: বাবার বাড়ি না শ্বশুরবাড়ি ঈদ করবেন?

সাবিলা নূর: এখন শ্বশুরবাড়িতে আছি। ঈদের সময়ও এখানেই থাকব। 

রাইজিংবিডি: রমজান মাসে দুঃস্থদের জন্য আপনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন...

সাবিলা নূর: টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে যারা ক্যামেরায় কাজ করেন তাদের জন্য এখন খুব স্ট্রাগলিং একটা সময়। এছাড়া স্বল্প আয়ের অন্য যারা আছেন তাদের জন্যও স্ট্রাগলিং মোমেন্ট যাচ্ছে। করোনা সংকটের শুরু থেকে যতটা সম্ভব হয়েছে স্বল্প আয়ের মানুষদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। কখনো এক সপ্তাহের খাবার, কখনো এক মাসের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। নিরাপত্তা সামগ্রী দিয়েছি। এসব কাজ আরো করার পরিকল্পনা রয়েছে।

রাইজিংবিডি: ঈদে আপনার অভিনীত কতগুলো নাটক-টেলিফিল্ম এবার টিভিতে প্রচার হবে?

সাবিলা নূর: এ বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। রোজার মাস ও তার আগের মাসেও ঈদের নাটক-টেলিফিল্মের শুটিং হয়। কিন্তু আমার মিডটার্ম পরীক্ষা থাকার কারণে শুটিং করতে পারিনি। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই শুটিং শুরু করার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু যখন কাজ শুরু করার কথা, তখন থেকেই শুটিং বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে কোনো শুটিং করতে পারিনি। তবে ৬ মাস আগের কয়েকটি নাটক এখনও প্রচার হয়নি। সেগুলো ঈদে প্রচার হতে পারে। আসলে কাজ নিয়ে এখন একদমই মাথা ঘামাচ্ছি না। কারণ এই সময়ে যতটা সম্ভব আল্লাহর কাছে দোয়া করে এই দুর্যোগ থেকে মুক্তি চাওয়া উচিত। যদি বেঁচে থাকি সামনে আরো অনেক ভালো কাজ করতে পারব। 

রাইজিংবিডি: আপনারা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। বিয়ের পর একবার ইন্দোনেশিয়ার বালিতে গিয়েছিলেন।

সাবিলা নূর: হ্যাঁ। সিঙ্গাপুরেও গিয়েছিলাম। করোনার আগে দু’বার ঘুরতে যাওয়া হয়েছে। বিয়ের আগে থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলাম। কোন বছর কোথায় ঘুরতে যাব, তার একটা তালিকাও করেছিলাম। কিন্তু এখন সব বাতিল। 

রাইজিংবিডি: দুই মাসের বেশি সময় গৃহবন্দি থেকে কী আত্মউপলদ্ধি হলো?

সাবিলা নূর: নিজের সঙ্গে নিজের সময় কাটানো। সারাবছর শুটিংয়ে সময় কাটে। সেখানে অনেক মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসেও তাই। আসলে বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। কাজ হবে, উৎসব হবে, সবই করা যাবে। পয়লা বৈশাখ কেটেছে রঙহীন। এগুলো আবার আসবে। নিজেকে নিরাপদ রাখা, নিজের যত্ন নেওয়া, পরিবারকে সময় দেওয়া— এগুলোই আমার উপলদ্ধি। ভেবে ভালো লাগছে, করোনার কারণে পরিবারকে সময় দিতে পারছি।

রাইজিংবিডি: করোনা পরবর্তী কেমন বাংলাদেশ প্রত্যাশা করেন?

সাবিলা নূর: আশাকরি, করোনার সংকট দ্রুত কেটে যাবে। তারপরের বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন। যে কোনো বিপদে মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়াবে। এই সংকটে সবাইকে সবার পাশে দাঁড়াতে দেখেছি। আমার বিশ্বাস, করোনা সংকট কেটে গেলেও এই দৃশ্য বাংলাদেশের সব জায়গায় দেখতে পাবো।


ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়