ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাহুবল পাবলিক লাইব্রেরি এখন নিষ্প্রাণ

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাহুবল পাবলিক লাইব্রেরি এখন নিষ্প্রাণ

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ: এক সময় ছিল পাঠকে পূর্ণ এবং সরব, আর এখন নিষ্প্রাণ- নেই পাঠকের আনাগোনা। এই হচ্ছে হবিগঞ্জের বাহুবল পাবলিক লাইব্রেরি।অনিয়ম ও অবহেলায় লাইব্রেরিটির বেহাল দশা ।

১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া লাইব্রেরিটির সুনাম ছিল। স্থানীয় পাঠকে মুখর হতো এ লাইব্রেরির কক্ষ। লাইব্রেরিকে ঘিরে  তারুণ্যের মেলা বসতো।অথচ উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরে অবস্থিত লাইব্রেরিটির কার্যক্রম এখন একেবারেই যেন স্থবির ।  দেখভাল করার দায়িত্বশীল লোকের অভাব ।

খোঁজ নিতে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পাঠক জানালেন, তারা এ লাইব্রেরিতে আগে প্রায়ই এসেছেন। এখন আর সেই পরিবেশ নেই। তাই এখানে আসেন না।  তবে তারা এ উপজেলার মিরপুর পাবলিক লাইব্রেরিতে যান। সেখানে লাইব্রেরিতে বসে বই পাঠের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে বলে জানান।

বাহুবল পাবলিক লাইব্রেরির বেহাল দশা দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে  দুঃখ প্রকাশ প্রকাশ করেছেন এমপি কেয়া চৌধুরী। তিনি এ লাইব্রেরির উন্নয়নে ৮০ হাজার টাকার বরাদ্দ দিয়েছিলেন। অবশ্য তিনি মিরপুর পাবলিক লাইব্রেরিকেও একই সমান অর্থ বরাদ্দ দেন।

বাহুবল পাবলিক লাইব্রেরি পরিচালনার জন্য ২০১১ সালে ২ বছর মেয়াদি কমিটি হয়। কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তারপর আর কোন কমিটি হয়নি। এখন প্রায় তালাবদ্ধই থাকে লাইব্রেরিটি। লাইব্রেরির চারদিকিই ঘাসের স্তুপ। পাঠকের জন্য দরজা খোলা হয় না। নেই কোন কেয়ারটেকার কিংবা লাইব্রেরিয়ান।

লাইব্রেরিটির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি আব্দুল আউয়াল তহবিলদার সবুজ আক্ষেপ করে বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী বাহুবল পাবলিক লাইব্রেরিটি একসময় এ অঞ্চলের সাহিত্য সাংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র ছিল।  সে সময়ে এ লাইব্রেরি স্কুল কলেজের ছাত্র ও সাধারণ পাঠকের পদচারণায় মুখর থাকতো।  অথচ এখন দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনার কোন কমিটি নেই। লাইব্রেরিতে পাঠকরাও আসেন না।এই অবস্থা দূর করতে পদক্ষেপ দরকার।’

লাইব্রেরীর প্রাক্তন সেক্রেটারি রুহুল আমিন আখঞ্জি বলেন, ‘আমি প্রায় ছয় মাস আগে একটি ক্লাবের অনুষ্ঠান উপলক্ষে লাইব্রেরিতে প্রবেশ করেছিলাম। সে সময়ে দেখলাম অনেক বই নষ্ট হয়ে উই পোকাদের খাদ্য হয়েছে। দুঃখ লেগেছে। এ অবস্থার পরিবর্তন চাই।’

লাইবেরির আরেক প্রাক্তন সেক্রেটারি সোহেল আহমদ কুটি বলেন, ‘এ লাইব্রেরি এখন পুরোপুরি ধ্বংসের পথে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পদাধিকার বলে লাইব্রেরির সভাপতি।  একের পর এক  ইউএনও আসেন যান। স্থানীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক কর্মীরা তাদের কাছে লাইব্রেরি পুনরায়  উজ্জীবিত করার জন্য ধরণা দেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তারা লাইব্রেরির ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন না।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ‘কিছুদিন হলো আমি এখানে যোগদান করেছি। বিষয়টি নিয়ে বিষদভাবে দেখছি।’




রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/২ জুলাই ২০১৭/মামুন চৌধুরী/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়