ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘সাফল্য আমার পরিশ্রমের ফসল’

ছাইফুল ইসলাম মাছুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৫৯, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘সাফল্য আমার পরিশ্রমের ফসল’

নাফিসা তাবাসুম মাইসার

ছাইফুল ইসলাম মাছুম : বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানো, আড্ডা দিতে তার জুড়ি মেলা ভার। অবসরে বই পড়তে পছন্দ করেন। দেখতে পছন্দ করেন বিখ্যাত সব সিনেমা। এত কিছুর পরও পড়ালেখায় দারুণ মনোযোগী ও পরিশ্রমী তিনি। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময় ভালো রেজাল্ট করেছেন। বলছিলাম স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ফ্যাকাল্টি থেকে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পাওয়া শিক্ষার্থী নাফিসা তাবাসুম মাইসার কথা।

মাইসার জন্ম, বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরের খিলগাঁও তালতলা এলাকায়। বাবা মিজানুর রহমান দেওয়ান একটি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। মাইসা সব সময় হাসিখুশি স্বভাবের হলেও, তার শৈশব-কৈশোরে তেমন মধুর স্মৃতি নেই। কেননা শৈশবে তিনি হারিয়েছেন মাকে। কৈশোরে হারিয়েছেন বাবাকে। নানা-নানীর পরিবারে বড় হয়েছেন।

মাইসার শিক্ষাজীবন শুরু হয় খিলগাঁও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এরপর  মতিঝিল আইডিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি দেন। মাইসার পছন্দের বিষয় বিজ্ঞান। তাই স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন মাইক্রোবায়োলজিতে। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞানের প্রতি আমার আগ্রহ বেশি। সব সময় বিজ্ঞানে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যায়। নতুন বিষয় জানা যায়। আর বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়ে আরো আধুনিক হচ্ছে।’

পছন্দের বিষয়ে সিজিপিএ-৪ পেয়ে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন তিনি। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ায় স্টামফোর্ড তৃতীয় সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পেয়েছেন নাফিসা। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত ১৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তার গলায় সোনার মেডেল পরিয়ে দেন।

নাফিসা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমাকে যখন কল করে বলা হলো- আপনি প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছেন তখন অবিশ্বাস্য লাগছিল। প্রথমে আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। তাছাড়া আমি জানতামই না, এ রকম ভালো রেজাল্ট করলে স্বর্ণপদক পাওয়া যায়। তবে আমি মনে করি, এই সাফল্য আমার পরিশ্রমের ফসল।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ভালো রেজাল্টের জন্য এবং স্টামফোর্ডের বিজ্ঞান অনুষদের প্রথম স্থান অর্জন করায় আমি রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক পেলাম। আল্লাহর দরবারে অনেক শুকরিয়া যে, আমাকে এই পর্যায়ে পৌঁছানোর ক্ষমতা তিনি দিয়েছেন। আমার সাফল্যের রহস্য আমার পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ, পরিশ্রম, আমার পরিবারের সহযোগিতা। অবশ্য যার কথা না বললেই নয়, তিনি হলেন আমাদের ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. রাশেদ নুর। তার অণুপ্রেরণা ছাড়া এত বড় একটা সাফল্য পাওয়া সম্ভব ছিল না। আমাদের ডিপার্টমেন্টের সব শিক্ষক-শিক্ষিকা সব সময় আমাকে সাহায্য করেছেন।’

মাইসা স্টামফোর্ডে এমএসসি শেষ করেছেন মাইক্রোবায়োলজি বিষয়ে। এখানেও সিজিপিএ-৪ ধরে রাখতে পেরেছেন তিনি। বর্তমানে গবেষণা করছেন বায়োফিল্ম নিয়ে। উদ্দেশ্য অনুজীবগুলো কোন পরিবেশে কোন অবস্থায় থাকে তা পর্যবেক্ষণ করা এবং এগুলোকে কীভাবে মানুষের কাজে লাগানো যায় সেই পথ খুঁজে বের করা।

মাইসার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন জার্মানিতে বায়োফিল্ম নিয়ে পিএইচডি করার। পরে দেশে ফিরে বায়োফিল্ম নিয়ে আরো উচ্চতর গবেষণা করবেন তিনি। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমাদের দেশে বায়োফিল্ম নিয়ে তেমন গবেষণা হয় না। আমি এ অবস্থা পরিবর্তনের জন্য কাজ করবো।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়