ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

একটি স্মরণীয় সার্ভিসের ঘটনা

বিশ্বজিৎ দাশ বাবুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২২, ৩১ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
একটি স্মরণীয় সার্ভিসের ঘটনা

বিশ্বজিৎ দাশ বাবুল: বিয়ে মানে সুখের আশায় একটি নতুন সংসার। সেই সংসার সাজাতে ফ্রিজ, টিভি অনিবার্য। সেই অনিবার্যতা মেটাতে নতুন সংসারে সঙ্গী হয় আমাদের গর্ব ওয়ালটন ফ্রিজ। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ফ্রিজটি বাসায় নিয়ে যখন অন করা হলো তখন সেটা চলছিল না। ফলে কোনো কিছু ঠান্ডা হচ্ছিল না। এই ছুতোয় সবাই নতুন বউকে বিভিন্ন ধরনের কথা শোনাচ্ছিল। কি ফ্রিজ দিলো তোমার বাবার বাড়ি থেকে, চলে না, ঠান্ডা হয় না- আরও কত কি!

তখন আমাদের কাছে অভিযোগ এলো। অভিযোগ পাওয়ার পর সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত রওনা হলাম। পথে ঘটল আরেক বিপত্তি। মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! একটি বাচ্চা ছেলে পথে পড়ে থাকা গাছের শুকনো পাতা কুড়োচ্ছিল। হঠাৎ আমার মোটর সাইকেলের শব্দ পেয়ে দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় সরতে গিয়ে বাইকের সামনের চাকার সঙ্গে ধাক্কা খেল। সে ছিটকে রাস্তায় পড়ে গেল। রক্তারক্তি অবস্থা! আমি নিজেও রাস্তার পাশে ছিটকে পড়লাম। আশপাশের লোকজন জমা হলো। এক্সিডেন্ট হলে সবাই গাড়ির চালককেই দোষারোপ করে। সবাই উত্তেজিত হয়ে ওঠে। আমাকে বলে বাচ্চাটাকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যেতে। ঘটনাটি ঘটে সেই গ্রাহকের পাশের গ্রামে। আমি তাকে ফোন দিয়ে ঘটনাটি বলি। তার নাম বিল্লাল আহমেদ চেয়ারম্যান। তার ভাই মাননীয় সংসদ সদস্য। ফলে তিনি সহজেই আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যান। শুধু তাই নয়, সেই বাচ্চার চিকিৎসার ভার তিনি নিজে নেন।

ঘটনাটি ঘটে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানায়। যাই হোক, অনেক ঝামেলা পোহানোর পর তার বাসায় পৌঁছলাম। ফ্রিজটি পরীক্ষা করে দেখলাম, ওভারলোড-এর লাইন খোলা। লাইনটি সঠিকভাবে লাগিয়ে ফ্রিজ অন করলাম। সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজ চালু হয়ে গেল। এত ঝামেলার পর মাত্র দুই মিনিটে ফ্রিজটি ঠিক হয়ে গেল দেখে বাড়ির সবাই খুব খুশি। এবং আমরা যে এত দূরে গিয়ে হোম সার্ভিস দিচ্ছি, এতে চেয়ারম্যান সাহেবও অনেক খুশি হলেন। কোম্পানির প্রশংসা করলেন। বিশেষ করে এত তাড়াতাড়ি ফ্রিজ ঠিক হয়ে যাবে তিনি আশা করেননি। ফ্রিজ ঠিক হওয়ায় পর চেয়ারম্যান সাহেবের স্ত্রীর মুখে যে স্বস্তির হাসি দেখতে পেলাম তা ভোলার মতো নয়। সর্বোপরি চেয়ারম্যান স্যার যেভাবে আমাকে দুর্ঘটনার কবল থেকে উদ্ধার করেন এবং বাচ্চাটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তা মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমি তার কাছে চির কৃতজ্ঞ। আমাদের কোম্পানির পক্ষ থেকে তাকে উক্ত ঘটনার জন্য পুরস্কৃত করা যায় কিনা বিবেচনার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

বিশ্বজিৎ দাশ বাবুল (অফিস আইডি-১১৩৩৯) উপরোক্ত লেখাটির জন্য মা দিবসে দ্বিতীয় সেরা লেখক নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ওয়ালটন সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, সিলেট অঞ্চলে কর্মরত। গত ১৩ মে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়েছে মা দিবস। এই দিনটিকে স্মরণে রেখে পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে দ্বিতীয় সেরা লেখক বিশ্বজিৎ দাশ বাবলুর মায়ের হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মাননা স্মারক। এ সময় তার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশি আমাকে এরূপ সম্মানিত করার জন্য। আমি গর্বিত।’

ওয়ালটন সম্পর্কে তিনি অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘ওয়ালটনের অনেক কিছু ভালো লাগছে। আমার ছেলে ওয়ালটনে চাকরি করছে। সে অনেক ভালো আছে। আমি আশীর্বাদ করি ওয়ালটন যেন আরো অনেক দূর এগিয়ে যায়।’ ছেলে বিশ্বজিৎ দাশ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে ছোটবেলায় অনেক চঞ্চল ছিল। গাছে উঠে আম-কাঁঠাল পেড়ে খেত। কিছু টাকা না দিলে স্কুলে যেতে চাইতো না। সে টাকা দিয়ে স্কুলের সামনে থেকে আইসক্রিম, চকলেট কিনে খেত। ও ছোট থেকেই খেতে খুব পছন্দ করে। এখন অবশ্য খাওয়া-দাওয়া অনেক কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ওয়ালটনে সে অনেক ভালো আছে। অনেক দিন হলো কাজ করছে। কখনও তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।’

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ মে ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়