ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বন্ধু দিবস

বিস্ময়কর, অতুলনীয় মার্ক্স এঙ্গেলস-এর বন্ধুত্ব

খালেদ সাইফুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ৪ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিস্ময়কর, অতুলনীয় মার্ক্স এঙ্গেলস-এর বন্ধুত্ব

সর্বহারার বৈপ্লবিক সংগ্রাম- মার্ক্সবাদের প্রবক্তা কার্ল মার্ক্সকে চেনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। তাঁর সমাজতাত্ত্বিক ভাবনা বিশ্বের নিপীড়িত, শোষিত মানুষকে মুক্তির স্বপ্ন দেখায়। সমাজের শ্রেণীবৈষম্য হটিয়ে সকলের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য কার্ল মার্ক্স নিরন্তর কাজ করেছেন। এই কাজের সঙ্গী ছিলেন আরেকজন, তিনি ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস। মার্ক্স ও এঙ্গেলস শুধু চিন্তাভাবনায় এক ছিলেন না, তাঁরা দুজন ছিলেন সহকর্মী, সহযোদ্ধা এবং  ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মার্ক্সবাদের ভিত্তি মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠা করতে প্রকৃত বন্ধুর মতো এঙ্গেলসও লড়েছেন সমানভাবে। এ কারণে মার্ক্সবাদের কথা বলতে গেলে ফ্রেডরিখ এঙ্গেলসকে কোনোভাবেই আলাদা করা যায় না।

মার্ক্সের সঙ্গে এঙ্গেলস-এর বন্ধুত্ব হয়েছিল ১৮৪৪ সালের দিকে। তাঁদের বন্ধুত্বকে সাধারণ বন্ধুত্বের শ্রেণীতে ফেলে বিচার করা যায় না। তাঁদের বন্ধুত্বের বৈশিষ্ট্য এমন ছিল- তাঁরা বন্ধুত্বের মাধ্যমে সমাজে একটি পরিবর্তনশীল চিন্তা প্রতিষ্ঠা করেছেন। চিন্তার মিল না হওয়ায় নিজের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রায় ছিন্ন করা মার্ক্সের বন্ধুত্ব হয়েছিল একইরকম চিন্তার অধিকারী এঙ্গেলস-এর সঙ্গে। তাঁরা বন্ধুত্বের মাধ্যমে দেখিয়ে গেছেন বন্ধু কীভাবে সমালোচনা, সহযোগিতা  ও বিশ্বাসের অংশ হতে পারে। অনেকেই এই বন্ধুত্বকে বলেছেন, ‘বিস্ময়কর, অতুলনীয়’।

এঙ্গেলস-এর সঙ্গে মিলে মার্ক্স ধ্রুপদী জার্মান দর্শন, চিরায়ত অর্থশাস্ত্র এবং ফরাসি সমাজতন্ত্রের মূল নীতিগুলো অধ্যায়ন করেন। মার্ক্স ও এঙ্গেলস উভয়ে মিলে রচনা করেন ‘কমিউনিস্ট ইশতেহার’। তাঁদের উভয়ের মিলিত প্রচেষ্টা, চিন্তা, অনুশীলনই মার্ক্সবাদের ভিত্তি তৈরি করে। এঙ্গেলস-এর নিঃস্বার্থ আর্থিক সহায়তা না পেলে ‘ডাস ক্যাপিটাল’ গ্রন্থটি মার্ক্স হয়ত শেষ করতে পারতেন না। ১৮৬৭ সালে বইটি লেখা শেষ হলে মার্ক্স বন্ধু এঙ্গেলসকে চিঠি লেখেন, ‘তোমার আত্মত্যাগ ছাড়া তিন খণ্ডের বিশাল এই কাজ করা আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব হতো না।

মার্ক্স-এঙ্গেলস-এর বন্ধুত্ব এতটাই গভীর ছিলো যে, এঙ্গেলস মার্ক্সের পরিবারের খোঁজ-খবর রাখতেন, আর্থিকভাবে সহায়তা করতেন। মার্ক্স ও এঙ্গেলস-এর মধ্যে যেসব চিঠি বিনিময় হয়েছে সেগুলোতে দেখা যায় মার্ক্স তাঁর জীবনের অন্তিম সময়গুলো পার করেছেন আর্থিক দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায়। মার্ক্সয়ের শেষ বয়সে এঙ্গেলস নিজের আয়ের টাকা দিয়ে বন্ধুর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। 

এই দুজনের বন্ধুত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ জার্মানির বার্লিনে নির্মিত হয়েছে মার্ক্স-এঙ্গেলস পার্ক। এই দুই মহান মনীষীর বন্ধুত্বের নিদর্শন আমাদের জন্য অনুকরণীয়।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ আগস্ট ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়