ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাবার জীবন থেকেই প্রেরণা পাই: শমী কায়সার

রাহাত সাইফুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২১, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাবার জীবন থেকেই প্রেরণা পাই: শমী কায়সার

আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি বুদ্ধিজীবী নিধন ইতিহাসের নৃশংসতম ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। বাঙালি বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক এই সুপরিকল্পিত নিধনযজ্ঞের শিকার হন। পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি সামরিক শাসকগোষ্ঠী এই ঘৃণ্য নীলনকশা প্রণয়ন করে। তাদেরই নির্দেশনায় এদেশীয় রাজাকার, আলবদর, আলশাসম বাহিনীর সদস্যরা এই হত্যাযজ্ঞ ঘটায়।

পূর্ববাংলার বুদ্ধিজীবীরা বরাবরই ছিলেন পাকিস্তানি শাসকদের বিরাগভাজন। বুদ্ধিজীবী হত্যা স্পষ্টতই ছিল সামরিক জান্তার নীলনকশার বাস্তবায়ন। তাদের লক্ষ্য ছিল বুদ্ধিজীবীদের নিশ্চিহ্ন করে বাঙালি জাতিকে নেতৃত্বহীন করা। এর নেতৃত্ব দেন পাকিস্তান গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। তারই ধারাবাহিকতায় হত্যা করা হয় সাংবাদিক, লেখক ও বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারকে। মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তার স্থানীয় সহযোগী আলবদরদের হাতে অপহৃত হন।

তাঁর সুযোগ্যা কন্যা শমী কায়সার। বাবা শহীদুল্লা কায়সারের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আসলে বাবার বিশেষ স্মৃতি আমার নেই। কেননা আমি তখন ছোট, কোনো কিছু বুঝে ওঠার বয়স তখনও হয়নি। যে কারণে অনেক কিছু আমার মনেও নেই। খুব আক্ষেপ লাগে, আফসোস হয়- তখন যদি একটু বড় থাকতাম! তাহলে বাবাকে নিয়ে এখন অনেক স্মৃতি শেয়ার করা যেত। কিন্তু তা আর হবার নয়। মায়ের কাছে বাবার কিছু কথা শুনেছি, এতটুকুই।

শমী কায়সার ব্যথাতুর হৃদয়ে আরো বলেন, বাবার ব্যবহৃত কোনো কিছু দেখলে আজও বাবাকে ভীষণভাবে মিস করি। বাবার কথা মনে পড়লেই তাঁর ব্যবহৃত জিনিসগুলো উল্টেপাল্টে দেখি। তাঁর কয়েকটি অপ্রকাশিত ডায়েরি আছে আমার কাছে। সেগুলোর পাতায় চোখ বুলাই; ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টি। তারপরও অক্ষরগুলো পড়ার চেষ্টা করি। বুঝতে চেষ্টা করি, বাবার ভাবনা, প্রতিদিনের দিনলিপি, জীবন দর্শন।’

একটু থেমে শমী কায়সার পুনরায় বলতে থাকেন, ‘বাবার ব্যবহৃত যে কোনো কিছু স্পর্শ করলেই আমার মনে হয়- বাবাকেই স্পর্শ করছি। তখই দেশ, দেশপ্রেম, ভালোবাসা, স্নেহ, ত্যাগ-তিতিক্ষা, জীবনের চড়াই-উতরাইয়ের কথাগুলো মনে পড়ে। বাবা ছাড়া জীবনে বেড়ে ওঠার প্রতিটি প্রেক্ষাপট আমাকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে। কিন্তু সেখানে দাঁড়িয়ে বাবার জীবন থেকেই আমি প্রেরণা পাই।’ 



ঢাকা/রাহাত সাইফুল/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়