ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চেতনায় জাগ্রত প্রিয় কবি কাজী নজরুল

ফাতেমা খাতুন মুক্তা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০০, ২৫ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
চেতনায় জাগ্রত প্রিয় কবি কাজী নজরুল

কাব্যজগতে এক হিরন্ময় দ্যুতি ছিলে তুমি,

একঘেঁয়েমিতে ভরা।

রুক্ষ খরায় তপ্ত পাতাঝড়া সাহিত্যের উপবনে

সাহসী এক শব্দ তীরন্দাজ।

কে বলে তুমি নেই?

হে কবি,

তুমি আছো

তুমি থাকবে,

তুমি থাকবে তেজদীপ্ত হুঙ্কারে,

তুমি থাকবে একুশ বছরের টগবগে তরুণের অনুভবে বিদ্রোহী চেতনা হয়ে,

তুমি থাকবে বাঁশের বাঁশরী হাতে অপেক্ষমান প্রেমিকের রোমাঞ্চিত হৃদয়ে,

প্রাণের দোসর হয়ে কবি তুমি আসবে যুগে যুগে আমার লেখনিতে।

সাহিত্যের অঙ্গনে তোমার উপস্থিতি দেখবো বলে

আমি রোজ অপেক্ষায় থাকি,

আমি ঘুচিয়ে দেই আছে যত আঁধার কালো,

আমি বিদ্রোহী কবির ছটফটে প্রেমিক মনে বিরাজমান সেই প্রেমিকা,

ভালোবেসে কবি আমায় নাম দিয়েছিলে নার্গিস।

কবিমানসের প্রধান প্রেরণাই যে প্রেম,

কখনো নিভৃতে কখনো ঝড়ের গতিতে

তুমি আমায় করেছিলে প্রেম নিবেদন।

তোমার সামনে আমি কখনো এসেছি কানন দেবী হয়ে,

কখনো এসেছি জীবনসঙ্গিনী প্রমিলা সেনগুপ্তা হয়ে।

তাইতো কবি তোমার প্রেমকে অবমূল্যায়িত করিনি আমি,

আমি চেতনায় উজ্জীবিত করি প্রেম।

আমি কলমে কলমে প্রেমের শোণিত ধারায়

শব্দের জোয়ারে ভাসিয়ে দিব

যত জরা গ্লানি ধেয়ে আসা মহামারি,

আমিই যে কবি কাজী নজরুল ইসলামের চেতনাকে বক্ষে ধারণ করি,

কবি চেতনাকে প্রাণপণে সমৃদ্ধ করি আগামী প্রজন্মের শিথিল হওয়া ধমনীতে।

আমি এনে দিতে পারি থমকে যাওয়া পৃথিবীতে নতুন ভোর,

আর নেই বেশিদিন—

অসহায়ত্বের অন্ধকার এবার ঘুচবেই,

দুঃসহ রাত্রির পটভূমি শেষ হবে সূর্যকরোজ্জল ভোরের সুন্দর আগমনীতে,

বাতাসে বাতাসে লাবণ্য আভায় প্লাবিত হবে

অনুভবের শব্দগুলো।

প্রতি চাঁদরাতেই মন মাতোয়ারা হয় যে সুর ঝংকারে, যে গানের কথামালায় হৃদয় বিগলিত হয়

সে তো হে কবি তোমারই অবদান,

মহামারির এই ক্রান্তিলগ্নে

ক্ষণিকের জন্য হলেও হয়তো প্রতিবারের মতোই এবারও মন আবেগে আপ্লুত হবে শুনে শুনে,

‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ,

তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাগিদ।’

আমি বুঝিনা

আমি মানতে পারি না,

সবাই কেন যে শুধুই খুঁজে পায় কবির চেতনায় বিদ্রোহের মনোভাব।

ক্ষুদিরামের ফাঁসি,

জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে জালিয়ানওয়ালাবাগে গণহত্যা

ইতিহাসের অন্তরকে যখন শোকে-ক্রোধে অস্থির করে তুলছিল,

হ্যাঁ, ঠিক তখনই

বিদ্রোহী কবিতা স্বাধীনচেতা মানুষের হৃদয়ে এক বিস্ময়কর ঝড় তোলে,

যে কবিতা ২২ বছর বয়সী কবিকে জনপ্রিয়তার উচ্চতর পর্যায়ে পৌঁছে দেয়,

সে-ই বিদ্রোহী কবিতা পাঠক হৃদয়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে,

তাই বলে কি

কবিকে

‘বিদ্রোহী’ জয়তিলক ললাটে অক্ষত করে বয়ে বেড়াতে হবে অনন্তকাল?

কবি হৃদয়ের সব আকুলতা

সব আবেশিত অনুভবই কি চিরকাল চাপা রবে নীরবে নিভৃতে?

যার শব্দে ছন্দে এতো প্রেম এত আবেগ—

তার ব্যতিক্রমী সুর সমৃদ্ধ গানের কথামালায়

আমার বিরহী মন মুহূর্তেই প্রেমময় হয়ে উঠে,

আমার বিগলিত ও আবেগাপ্লুত তৃষিত হৃদয়

তৃষ্ণা মেটায় মুহূর্তেই মুগ্ধতার রসাস্বাদনে,

সেই কবি প্রাণের অনুভূতিতে

প্রেমের ফোয়ারার

অফুরান উপমার স্রোত ধারায়

আজো অজস্র ভালোবাসার প্রস্রবন উচ্ছ্বসিত হয়,

আজো চঞ্চল ঝর্ণা ধারার মতো প্রেম বহমান হয়

কবি উত্তরসূরীদের অন্তরেরই প্রান্তরে প্রান্তরে।

 

ঢাকা/শান্ত

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়