ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নিউমোনিয়ায় বছরে এক মিলিয়ন শিশুর মৃত্যু

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:০৮, ১২ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিউমোনিয়ায় বছরে এক মিলিয়ন শিশুর মৃত্যু

আরিফ সাওন : বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস আজ । নিউমোনিয়া ফুসফুস প্রদাহ জনিত রোগ। এই রোগে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। এটি পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর প্রধান ঘাতক । বছরে বিশ্বে প্রায় এক মিলিয়ন শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

২০০৯ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত মৃত্যুর আশংকা বেশি থাকে। নিউমোনিয়া একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ হলেও প্রতি ২০ সেকেন্ডে বিশ্বে একজন শিশু এ রোগে মারা যায়।২০১৫ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৯ লাখ ২০ হাজার ১৩৬ জন শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের প্যারেনকাইমার প্রদাহ বিশেষ। সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক সংক্রমণের কারণে নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়া থেকে ফ্লু হবারও সম্ভাবনা থাকে।

জনস্বাস্থ্য বিশষজ্ঞ ডা.ফয়জুল হাকিম বলেন, ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারা নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়। সারা বিশ্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি। তবে শিশু ছাড়া সব বয়সীরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এবং বয়স্কদের জন্যেও এ রোগ ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া আইসিইউতে থাকা রোগীদেরও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকে।

তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকা নিউমোনিয়ার জন্য খুবই বিপদজ্জনক। যে পরিমাণ ধুলো-বালি ব্যাকটেরিয়া বাতাসে আছে, তা শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে শ্বাসতন্ত্রে গিয়ে ইনফেকশন হতে পারে। আর শ্বাসতন্ত্রে ইনফেকশন থেকে নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়া হলে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।

তিনি আরো বলেন, ‘ধুলাবালি থেকে যদি দূরে থাকা যায় তাহলে এই রোগ অনেকটা কমে আসবে। আমাদের দেশের শহরগুলোয় যে ভাবে পরিবেশ দূষন আছে, ধুলোবালি আছে, অপরিচ্ছন্ন, মেডিক্যাল বর্জ্য হতে শুরু করে নানা রকম বর্জ্য যেভাবে রাস্তায় পড়ে থাকে, এ থেকেই মূলত মানুষের শ্বাসতন্ত্রের রোগ হয়। রাজধানীর শিশু হাসপাতালে গেলে বোঝা যায় কি পরিমাণ শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।’

নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলো হচ্ছে, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, কাঁপুনি, ঘাম হওয়া, বুকে ব্যাথা যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে উঠা নামা করে, মাথা ব্যথা, মাংসপেশীতে ব্যাথা ক্লান্তি অনুভব করা। এসব সমস্যা হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

নিউমোনিয়া থেকে আরোগ্য লাভের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে। প্রচুর তরল খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট নিউমোনিয়া এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিত্সা করা যেতে পারে, কিন্তু দুই তৃতীয়াংশ শিশু প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক পায় না। নিউমোনিয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় বিশ্বে প্রতিবছর ১০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত প্রতিবছর বিশ্বে প্রায় ১ মিলিয়ন শিশু মারা যায়। যা ম্যালেরিয়া, এইচআইভি এইডস ও হাম রোগের চেয়ে বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন আরো বলা হয়েছে, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রনের জন্য বাংলাদেশ, ভারত, কেনিয়া, উগান্ডা এবং জাম্বিয়ায় বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সম্মিলিতভাবে নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারলে বিজয়ী হওয়া সম্ভব।

 

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ নভেম্বর ২০১৬/আরিফ সাওন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়