ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

আঁধারে মিলিয়ে যাবে সারা?

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আঁধারে মিলিয়ে যাবে সারা?

খুব চটপটে ছিল সারা। মিষ্টি মিষ্টি দুষ্টুমিতে মাতিয়ে রাখত মা-বাবাকে। সেই সারা এখন শয‌্যাশায়ী। সারা দিন কাটছে হাসপাতালের বিছানায়।

সারার বাবা-মা স্বপ্ন দেখছেন, একদিন ঠিক সুস্থ হয়ে উঠবে সে। আবার আগের মতো হাসবে-খেলবে, মুখর করে রাখবে চারিদিক। কিন্তু অনেক চিকিৎসা করিয়েও মেয়েকে সুস্থ করাতে পারছেন না বাবা-মা।

আড়াই মাস ধরে রাজধানীর শ্যামলীতে শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সারা। দুটি কিডনি একেবারে অকেজো। একদিন পরপর ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছে। তার অবস্থা দিন দিন আরো খারাপ হচ্ছে।

সারার মা হালিমা আক্তার জানান, সারা ২০১৪ সাল থেকে অসুস্থ। শুরুর দিকে তার চোখ ফুলে যেত। এরপর আস্তে আস্তে সমস্ত শরীরে ফুলতে শুরু করে। চিকিৎসকদের কাছে নেয়া হলে তারা জানান, তার কিডনিতে সমস্যা। এ কারণে এমন হচ্ছে। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে চিকিৎসকরা জানান, তার দুটি কিডনি একেবারেই বিকল।

সারার বাড়ি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার থানার পাথরাইল গ্রামে। এখন তারা থাকেন মিরপুর ২ এর ৬০ ফিট রোডের এক বাসায়।

সারার বাবা শহিদুল ইসলাম থাকেন কাতারে। সেখানে গাড়ি চালান তিনি। ২০১৪ সাল থেকে তিনি কাতারে আছেন। মেয়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতেই তিনি বিদেশে গেছেন।

সারার মা জানান, সারার চিকিৎসায় এখন প্রতি মাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। ১৫-২০টি ডায়ালাইসিস করাতে হয়। প্রতিটি ডায়ালাইসিসে ২ হাজার ৫০০ টাকা লাগে। মাসে ১০ হাজার টাকার দুটি ইনজেকশন লাগে ।

সারার বাবা প্রতি মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা দিতে পারেন। কিছু টাকা আত্মীয়-স্বজনরা কিছু দিয়েছেন। বাকিটা ধারদেনা করতে হচ্ছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কিডনি প্রতিস্থাপন করা হলে সারা বাঁচতে পারে। তবে এ দেশে কিডনি প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়। তারা বিভিন্ন দেশের চিকিৎসকের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য যেতে হবে ভারতে। সেজন‌্য প্রয়োজন অন্তত ৪০ লাখ টাকা। এত টাকা জোগারের চিন্তায় দিশেহারা সারার মা-বাবা। মেয়ের চিকিৎসার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।

সোমবার দুপুরে শিশু হাসপাতালের শিশু নেফ্রোলজি ওয়ার্ডের ৯ নম্বর বেডে গিয়ে দেখা যায়, সারার পাশে বসে আছেন তার মা। তার মুখ বিষণ্ন, কপালে চিন্তার ভাঁজ।

এই দম্পতির আরো দুটি সন্তানের একজন পেটেই মারা যায়। সে ছিল প্রথম সন্তান। সারা মেজো। সারা যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেখানে এক দুর্ঘটনায় মারা যায় আরেক সন্তান।

একমাত্র জীবিত সন্তান সারাকে নিয়ে তাদের স্বপ্ন দেখার কথা। কিন্তু স্বপ্ন ক্ষয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে। সারা দিন দিন নিস্তেজ হয়ে আসছে। সারার শরীরের নিচের অংশ শুকিয়ে যাচ্ছে। পা দুটি শুকিয়ে একেবারে সরু হয়ে গেছে। মাস দেড়েক ধরে হাঁটতে পারছে না।

সারার মা বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য হাতে সময় একেবারেই কম। ছোট ছোট অস্ত্রোপচার আর ডায়ালাইসিসের জন্য তার শরীরে এখন ছিদ্র করার জায়গা খুঁজে পাওয়া কঠিন। আট মাস আগে ডায়ালাইসিসের জন্য বুকের বাম পাশে প্রাম্প ক্যাথেলার করানো হয়। একবার করলে ছয় মাস পর্যন্ত রাখা যায়। কিন্তু তা আট মাস হয়ে গেছে। দুই মাস সময় পার হলেও এখনো পরিবর্তন করতে পারছেন না। দুই বার করা যায়। এটা আর হবে কি না, তার গ্যারান্টি নেই। সব মিলিয় এই রোগের জন্য তার শরীরে ১৬/১৭ বার ছোটখাটো অস্ত্রোপচার হয়েছে। এরপর যদি ডায়ালাইসিস করা সম্ভব না হয়, তাহলে বাঁচানো যাবে না তাকে।

সারাকে বাঁচাতে বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তার বাবা-মায়ে।

সারার মায়ের বিকাশ নম্বর : ০১৭৪৬০০৬১৫১

ব্যাংক অ‌্যাকাউন্ট:

হালিমা আক্তার

জনতা ব্যাংক লিমিটেড

হিসাব নম্বরঃ ০১০০০৪৫৬৯২৫৫২


ঢাকা/সাওন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়