ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

করোনা আতঙ্কে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল রোগীশূন্য

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ৮ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 করোনা আতঙ্কে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল রোগীশূন্য

দিনরাত যেখানে রোগীর উপচে পড়া ভিড় দেখা যেতো, এখন সেখানে রোগীদের উপস্থিতিই চোখে পড়ে না।

করোনা আতঙ্কে রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতাল।পুরো হাসপাতাল এলাকা নিরব-নিস্তব্ধ।

এ অবস্থায় জটিল কোন রোগী আসলেও চিকিৎসকের সংকটের কারণে তাকে ঢাকা-সিলেট রেফার করা হয়। আর এজন্য হাসপাতাল গেটে অপেক্ষায় থাকেন অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায়ীরা। তেমন কোন রোগী আসলেই তাদের ডাক পড়বে সেই আশায় ঘুর ঘুর করেন তারা।

প্রায় এক মাস যাবৎ হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ও প্রধান সহকারী না থাকায় এই দুঃসময়ে হাসপাতালটি হয়ে পড়েছে অভিভাবকশূন্য। এক মাস যাবৎ বেতন পাচ্ছেন না কর্মচারীরা।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড রোগী শূন্য। এই ওয়ার্ডে ৩০টি বেড থাকলেও অন্য সময় এখানে একশ'র বেশি রোগী ভর্তি থাকতো। তবে পাশের গাইনী ওয়ার্ডে কিছু রোগী আছে। কিন্তু সেই ওয়ার্ডে ফাঁকা স্থান থাকলেও কেউই মানেননি সামাজিক দুরত্বের নিয়ম। ফুল বানু নামে এক রোগী বলেন, ‘আমাদেরকে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।'

জরুরী বিভাগে গিয়ে জানা যায়, সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার ছিলেন কিন্তু তার দেখা মেলেনি। বেশ কয়েকজন রোগী আসলে তাদেরকে চিকিৎসা দেন ইন্টার্ন ডিপ্লোমা চিকিৎসকরা। তারাও সেখানে সামাজিক দুরত্ব মেনে চলছেন না।

হাসপাতালের নতুন নির্মিত ২৫০ শয্যা ভবনের ৮ম তলায় করা হয়েছে করোনা রোগীর জন্য আইসোলেশন সেন্টার। ৫০টি আসন রয়েছে। সেখানে ২ জন আছেন চিকিৎসাধীন। এর আগে আরও ১২ জন ছিলেন সেখানে। করোনার ভয়ে ওই ভবনে লোকজনের যাতায়াত চোখে পড়েনি।

হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মিঠুন রায় জানান, এক মাস হয়েছে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রথীন্দ্র দেব ও প্রধান সহকারী মিজানুর রহমানকে বদলী করা হয়েছে।

ডা. আশরাফ উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করলেও তাকে পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়নি। ফলে কোন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও কর্মচারীরা গত মাসের বেতন পাননি। রোগী কম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে শহরের কোন রোগী আসে না। বেশিরভাগ রোগী আসে গ্রাম থেকে। গাড়ি না থাকায় আসা কষ্টদায়ক। আর ৮টা থেকে ১২টার মাঝে দূরের রোগী আসতে পারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তত্ত্বাবধায়ক এবং প্রধান সহকারীকে এভাবে বদলী করা উচিত হয়নি। আর আমরা বেতন না পেয়ে কষ্টে আছি। কাজ করব কিভাবে।'

হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যিনি চার্জে আছেন তিনি পরিচালক অর্থ বরাবর পত্র দিলেই বিষয়টির সমাধান করা যেত। এটি হাসপাতালের ব্যাপার। কর্মচারীদের বেতন দিতে বিলম্ব করা ঠিক নয়।'

 

মামুন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ