ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মে মাসে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৩৩

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ১ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মে মাসে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ৩৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশব্যাপী মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে চলতি বছরের মে মাসে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৩৩ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।

র‌্যাব দাবি করছে, ৪ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত সারা দেশে তারা ৮৩৭টি অভিযান পরিচালনা করেছে। মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে তারা এক হাজার ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রায় ৬২ কোটি টাকা মূল্যমানের হেরোইন, ইয়াবা, ফেন্সিডিল, গাঁজা, বিদেশি ও দেশি মদ উদ্ধার করেছে।

এছাড়া মাদকবিরোধী অভিযানের সময় ৪২৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিন হাজার ৬১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। এদের মধ্যে তিন হাজার ৫৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও বিভিন্ন পরিমাণ অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

র‌্যাব সদর দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ১৫ মে র‌্যাব-১১ এর সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে ‘বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হন রিপন নামে একজন। ওই রাতে কুষ্টিয়ায় র‌্যাব-১২ এর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হামিদুল ইসলাম; যাকে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি র‌্যাবের।

১৭ মে রাজশাহীতে র‌্যাব-৫ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন আবুল হাসান ওরফে হাসান। ১৮ মে চাঁপাইনবাবগঞ্জে র‌্যাব-৫ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন আব্দুল হালিম; একই রাতে চট্টগ্রাম সদর থানা এলাকায় র‌্যাব-৭ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন হাবিবুর রহমান প্রকাশ ওরফে মোটা হাবিব এবং মো. মোশাররফ।

১৯ মে যশোরের অভয়নগরে র‌্যাব-৬ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন তিনজন। আবুল কালাম, হাবিব শেখ এবং মিলন কাশারী নামে এই তিনজনকেও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করছে র‌্যাব।

২১ মে টাঙ্গাইলে র‌্যাব-১২, রাজশাহীতে র‌্যাব-৫, ঝিনাইদহে র‌্যাব-৬ এবং নরসিংদীতে র‌্যাব-১১ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত নিহত হন। এদের মধ্যে টাঙ্গাইলে আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহীতে লিয়াকত আলী মণ্ডল, ঝিনাইদহে ছব্দুল মণ্ডল এবং নরসিংদীতে ইমান আলী নামে নিহত প্রত্যেকেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি র‌্যাবের।

২২ মে চট্টগ্রাম ও ফেনীতে র‌্যাব-৭, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় র‌্যাব-১০ নারায়ণগঞ্জে র‌্যাব-১ এর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে চট্টগ্রামে শুক্কুর আলী, ফেনীতে মো. মঞ্জুরুল আলম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধন মিয়া, নারায়ণগঞ্জে বাচ্চু মিয়া রয়েছেন।

২৩ মে গাইবান্ধায় র‌্যাব-১৩ ও ফেনীতে র‌্যাব-৭ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রাজু ও মো. ফারুক নামে দুই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন বলে দাবি র‌্যাবের।

২৫ মে তেজগাঁওয়ে র‌্যাব-২ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কামরুল নামে একজন নিহত হন।

২৬ মে দিনাজপুরে র‌্যাব-১৩ ও জয়পুরহাটে র‌্যাব-৫ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সবদারুল ও রেন্টু শেখ নামে দুজন নিহত হন।

২৭ মে টেকনাফে র‌্যাব-৭ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. একরামুল হক নামে পৌর কাউন্সিলর নিহত হন। পরদিন নাটোরে র‌্যাব-৫ এর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে খালেক নামে একজন নিহত হন।

২৯ মে বরগুনায় র‌্যাব-৮ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ফিরোজ মৃধা নামে একজন নিহত হন।

৩০ মে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে পৃথক সময়ে র‌্যাব-৭ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. মজিবুর রহমান ও মো. ইসহাক ওরফে ইয়াবা ইসহাক নামে দুজন ও সিরাজগঞ্জে র‌্যাব-১২ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আশান হাবীব নামে একজন নিহত হন। একই রাতে ঢাকার ভাষানটেকে র‌্যাব-৪ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আতাউর রহমান ওরফে আতা, বাপ্পি এবং মোস্তফা হাওলাদার ওরফে কসাই মোস্তফা নামে তিনজন নিহত হন।

১ জুন রাজশাহীতে র‌্যাব-৫ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মো. বেলাল হোসেন ওরফে বেলাল ও মো. নাজমুল হক নামে দুজন নিহত হন।

মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।

বৃহস্পতিবার টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, সংবিধানে সব নাগরিককে ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার দিয়েছে। কথিত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা তালিকা ধরে মাদকবিরোধী যে অভিযান চলছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তা আইনগতভাবে কতটা গ্রহণযোগ্য সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বিচারিক প্রক্রিয়ায় দোষীসাব্যস্ত হওয়ার আগেই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যেভাবে ‘তালিকাভুক্তরা’ নিহত হচ্ছেন, তা পুরোপুরি অসাংবিধানিক।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, মাদক নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ জুন ২০১৮/নূর/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়