ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ক্যামেরা-ইমেইল নিয়ে মন্তব্যে হাসির খোরাক মোদি

শাহেদ হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ১৩ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্যামেরা-ইমেইল নিয়ে মন্তব্যে হাসির খোরাক মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :  ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমন দাবি করেছেন, যা সময় এবং ইতিহাসের বাস্তবতার সঙ্গে কোনোভাবেই মেলানো সম্ভব নয়। ১৯৮৮ সালে ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ই-মেইল ব্যবহার করেছিলেন বলে দাবি করে কার্যত তিনি হাসির খোরাক হয়ে উঠেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে অভিযানে যখন বিশেষজ্ঞরা খারাপ আবহাওয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলেন, তখন তিনিই বলেছিলেন, মেঘের আড়ালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমানকে ধরতে পারবে না পাক রাডার। তা নিয়ে রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যত ট্রোলড হন মোদি। তার ওই মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক আক্রমণ, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ চলে দিনভর। রাত পোহাতেই সাক্ষাৎকারের আরো একটি অংশ ভাইরাল হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই বলেছেন, এই অংশে মেঘলা আবহাওয়া রাডার মন্তব্যকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন মোদি।

সাক্ষাৎকারে মোদির কাছে প্রশ্ন ছিল - প্রযুক্তি ও গ্যাজেটে তিনি এত স্বচ্ছন্দ কীভাবে। বরাবরই নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রতি তার আকর্ষণ বেশি, গ্যাজেট নিয়ে আগ্রহী। কিন্তু তার পরই একটি উদাহরণ দিতে গিয়েই বিপত্তি বাধান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সম্ভবত আমিই দেশে প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহার করেছিলাম। ১৯৮৭-৮৮ সাল হবে। তখন খুব কম মানুষের ই-মেইল ছিল। আমার এখানে বীরমগামে আদভানির সভা ছিল। আমি ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তুলি। তখন ডিজিটাল ক্যামেরা অনেক বড় হত। আমার কাছে তখন ছিল। আমি ছবি তুলে দিল্লিতে পাঠিয়ে দিই। পরের দিন রঙিন ফোটো ছাপা হয়। আদাভানি আশ্চর্য হয়েছিলেন যে, এক দিনের মধ্যে দিল্লিতে কীভাবে রঙিন ছবি ছাপা হল?’ সাক্ষাৎকারের এই অংশ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে নেটিজেনরা।

নেটিজেনদের দাবি, অকাট্য যুক্তির ক্ষেত্রে যদিও বা ‘ডিজিটাল ক্যামেরা’র অংশ মেনে নেওয়া যায়, মোদির ই-মেইল দাবিকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ জাপানি ক্যামেরা প্রস্তুতকারী সংস্থা নিকন প্রথম বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য ডিজিটাল ক্যামেরা বাজারে আনে ১৯৮৬ সালে। যুক্তির ক্ষেত্রে যদিও বা মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু বাস্তবে মাত্র এক-দু’বছরের মধ্যেই ডিজিটাল ক্যামেরা ভারতে এসেছিল এবং তা মোদির হাতে ছিল, এটা মেনে নেওয়া কার্যত অসম্ভব। আর ই-মেইল প্রথম চালু হয় ১৯৯৫ সালে। আটের দশকে এই দেশে ই-মেইল দূরে থাক, ইন্টারনেটের ধারনাও খুব কম মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ ভারতে প্রথম ইন্টারনেট পরিষেবা শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। ফলে মোদির ‘ই-মেইল’ সংক্রান্ত দাবি পুরোপুরি অসম্ভব।

স্বাভাবিকভাবেই ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপের ঝড় বইতে শুরু করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।  সাক্ষাৎকারের ওই অংশ পোস্ট করে কেউ সুক্ষ খোঁচা দিচ্ছেন মোদিকে।

দিব্যা স্পন্দন নামে এক কংগ্রেস নেতার সরস প্রশ্ন, ‘যদি ধরেও নেওয়া যায় যে ১৯৮৮ সালে মোদির ই-মেল ছিল, কিন্তু সেই সময় তো অন্য কারো ই-মেইল ছিল না, তাহলে তিনি কাকে ই-মেইল পাঠাতেন?’

অর্থনীতিবিদ রূপা সুব্রহ্মণ্যমের টুইট, ‘মোদি কোনোভাবে ১৯৮৮ সালে ই-মেইল ব্যবহার করেছেন, যেটা আমাদের কাছে্ সরকারিভাবে এসেছে ১৯৯৫ সালে।’

সূত্র : আনন্দবাজার

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ মে ২০১৯/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়