ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

উদ্ধার ৩৯ লাশই ভিয়েতনামের নাগরিকদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৬, ২ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
উদ্ধার ৩৯ লাশই ভিয়েতনামের নাগরিকদের

ইংল্যান্ডের এসেক্সে কনটেইনার থেকে উদ্ধার হওয়া ৩৯ লাশই ভিয়েতনামের নাগরিকদের বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এসেক্সের পুলিশ শুক্রবার বলেছে ভিয়েতনাম ও যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি পরিবারসহ ভিয়েতনাম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর এসেক্সের শিল্প এলাকায় একটি রেফ্রিজারেটেড লরির কনটেইনার থেকে ৩৯ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এদের মধ্যে ৩১ জন পুরুষ ও আট নারী। প্রাথমিকভাবে তারা চীনের নাগরিক বলে ধারণা করছিল পুলিশ।

ইংল্যান্ডে ভিয়েতনামিদের একটি সংগঠন ভিয়েতহোম বলেছে, অন্তত ২০ পরিবারের কাছ থেকে তারা তাদের স্বজন নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছে।

এর আগে মরদেহ উদ্ধারের খবরের পর ভিয়েতনামের একাধিক পরিবার থেকে জানানো হয়, তারা তাদের স্বজনদের খোঁজ পাচ্ছেন না। উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলোর মধ‌্যে তাদের স্বজন থাকতে পারে।

এরপর ফাম ট্রা মাই নামের এক তরুনীর মোবাইল ফোন থেকে তার মায়ের উদ্দেশে লেখা একটি বার্তা পাঠানোর কথা জানা যায়।

ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ২৬ বছরের ফম থি ত্রা মাই নামের ওই তরুণী মাকে লিখেছে- ‘আমি দু:খিত মম। আমার বিদেশ যাওয়া হলো না। আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি মারা যাচ্ছি, কেননা আমি শ্বাস নিতে পারছি না।’

মাইয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, উন্নত জীবনের আশায় মেয়েকে চীন হয়ে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাচারকারীদের তারা ৩০ হাজার পাউন্ড দিয়েছিলেন তারা।

বিবিসি জানিয়েছে, পুলিশের সহকারী প্রধান কনস্টেবল টিম স্মিথ বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে, আমাদের ধারণা মারা যাওয়া ব্যক্তিরা ভিয়েতনামের নাগরিক। আমরা ভিয়েতনাম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’ তিনি বলেন, পুলিশ মারা যাওয়া কাউকে শনাক্ত করার মতো অবস্থানে নেই।

এদিকে লন্ডনে ভিয়েতনাম দূতাবাসের পক্ষ থেকে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছে। দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করা দরকার। ভিয়েতনাম ও যুক্তরাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, প্রিয়জনদের মরদেহ বাড়ি ফিরিয়ে নিতে তাঁরা ভিয়েতনাম ও যুক্তরাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে ইচ্ছুক।

একসঙ্গে ৩৯ মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় লরির চালক মরিস রবিনসনকে ওই দিনই গ্রেপ্তার করা হয়। এসেক্স পুলিশ বলেছে, লরির ওই চালকের বিরুদ্ধে মানব পাচার, অভিবাসন ও অর্থ পাচারের অভিযোগও আনা হয়েছে।

এ ছাড়া ওই ঘটনায় আরও তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত সপ্তাহে পুলিশ উত্তর আয়ারল্যান্ডের ওয়ারিংটনে জোয়ানা মাহের (৩৮) ও তার স্বামী টমাস (৩৮) আটক করে। তারা ওই লরির মালিক। মানব পাচার ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তাঁদের আটক করা হয় বলে জানায় পুলিশ।

অবশ্য তারা দাবি করেছেন এক বছর আগে তারা লরিটি বিক্রি করে দিয়েছেন আয়াল্যান্ডের এক ব্যক্তির কাছে।

আর মৃতদেহ উদ্ধারের সময় আটক হন ওই লরির চালক মরিস মো রবিনসন। এছাড়া আরো এক লরি চালককে খুঁজছে পুলিশ। ওই চালক লরিতে করে ওই ৩৯ জনকে বেলজিয়ামের বন্দরে নিয়ে এসেছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজে বিষয়টি ধরা পড়েছে।

 

ঢাকা/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়