ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

আমেরিকা যেভাবে নির্যাতন চালায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আমেরিকা যেভাবে নির্যাতন চালায়

নিউ ইয়র্কের টুইন টাওয়ারে আল-কায়েদার হামলার পর সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে অনেককেই আটক রাখা হয়েছিল গুয়ান্তানামো বে’র কুখ্যাত কারাগারে। ২০০২ সালে সৌদি নাগরিক আবু জুবায়দাহকে পাকিস্তান থেকে আটক করা হয়। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ তাকে রেখেছিল গুয়ান্তানামো বে’র কারাগারে।

কারাগারে সিআইএ’র নির্যাতনের কিছু ছবি এঁকেছিলেন আবু জুবায়দাহ। সেসব ছবি তার আইনজীবী মার্ক ডিনবিয়াক্স এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছেন। এই প্রতিবেদনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমেরিকা কিভাবে নির্যাতন করে’।

 

 

মার্কিন সিনেটের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুবায়দাহ অন্তত ৮৩ বার ওয়াটারবোর্ড নির্যাতনের মুখে পড়েছিলেন। ‘নির্যাতনের এক পর্যায়ে সংবেদনহীন হয়ে পড়েছিলেন আবু জুয়াবায়দাহ, তার খোলা মুখ থেকে বুদবুদ বের হচ্ছিল’- বলা হয়েছে ২০১৪ সালের ওই প্রতিবেদনে।

অনেক সময় আবু জুবায়দাহকে নগ্ন কিংবা অর্ধনগ্ন রাখা হতো। তাকে ছোট্ট জায়গায় দুমড়ে-মুচড়ে থাকতে বাধ্য করা হতো। এর মধ্যেই শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো তার হাত।

 

 

আরেকটি ছবিতে নির্যাতনের যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে তাকে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘ওয়ালিং’। এই প্রক্রিয়ায় আবু জুবায়দায়হকে নগ্ন ও শেকলবন্দি অবস্থায় দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। নির্যাতক জুবায়দায়হর সামনে দাঁড়িয়ে তার গলার নিচে কিছু একট ঠেসে ধরতো এবং তার মাথা দিয়ে দেয়ালে আঘাত করা হতো। সিআইয়ের মনোবিজ্ঞানী জেসন জানান, তিনি একটি তোয়ালে জুবায়দাহর গলায় পেঁচিয়ে তার মাথা দিয়ে দেয়ালে তিন থেকে চারবার আঘাত করতেন।

এই নির্যাতন সম্পর্কে জুবায়দাহ বলেছিলেন, ‘প্রত্যেটি আঘাতের সঙ্গে আমি মেঝেতে পড়ে যেতাম। মুহূর্তের মধ্যে মনে হতো আমি কিছু দেখতে পারছি না। ছোট শেকলের কারণে আমি লম্বা হয়ে দাঁড়াতেও পারতাম না। প্রত্যেকবার মতো হতো এই বুঝি সে আমাকে তোয়ালে দিয়ে টেনে ধরবে, যার কারণে আমার গলা দিয়ে রক্ত ঝরতো’।

 

 

অপর কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে, নগ্ন করে বসা ও দাঁড়ানো উভয় অবস্থাতেই জুবায়দাহর হাত উপরে শেকল দিয়ে বেঁধে টানটান করে রাখা হতো। দাঁড়ানো অবস্থায় বাঁধা হলে তাকে দাঁড়াতে হতো দুই পায়ের আঙ্গুলের ওপর ভর দিয়ে। বন্দি যাতে ঘুমাতে না পারে, চরম যন্ত্রণা ভোগ করে এবং শেষ পর্যন্ত তীব্র মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করে সেজন্য দেওয়া হতো এই শাস্তি।

 

 

বেশ কয়েকটি ছবিতে ছোট আকারের বাক্সে শেকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে বন্দিকে ফেলে রাখার বর্ণনা দিয়েছেন  জুবায়দাহ। ছোট বাক্সে দীর্ঘ সময় দেহ কুঁচকে রাখায় প্রতিটি জোড়ায় অসহ্য যন্ত্রণা হতো। এর ফলে ব্যথায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলার আগ পর্যন্ত বন্দি চিৎকার করতে থাকতো।



ঢাকা/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়