বোরকা, দাড়ির জন্যও শাস্তি পেতে হয় উইঘুর মুসলমানদের
উইঘুরদের খুঁটিনাটিসহ ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করা হতো এসব নথিতে
চীনে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতনের নতুন দলিল ফাঁস হয়েছে।
বিবিসির পাওয়া এই নথি বা দলিলগুলোকে এ যাবৎকালে উইঘুরদের ওপর নির্যাতনের বিস্তৃত বর্ণনা বলা হচ্ছে।
দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং প্রদেশে তিন হাজারের বেশি মুসলমানের দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটিসহ ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে এসব দলিলে।
চীন সরকার দাড়ি রাখা, বোরকা পরা, পাসপোর্টের আবেদন কিংবা ইন্টারনেটে বিদেশি ওয়েবসাইট ব্রাউজিংয়ের কারণে উইঘুরের অনেক মুসলিমকে বিভিন্ন অন্তরীণ শিবিরে নিয়ে যায় বা আটকে রাখে বলে নথির বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
১৩৭ পৃষ্ঠার দলিলের প্রতিটি পৃষ্ঠায় কলাম করে ওই সব মুসলমান দৈনিক কতবার নামাজ পড়েন, কী পোশাক পরেন, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাও লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদের আচার-আচরণের বিস্তারিতও লেখা হয়েছে নথিগুলোতে।
অবশ্য চীন সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এগুলো দেশটির সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় উগ্রপন্থা মোকাবেলায় নেওয়া পদক্ষেপের অংশ।
বলা হচ্ছে, এসব দলিল অত্যধিক ব্যক্তিগত ঝুঁকি নিয়ে সংগ্রহ করা হয়েছে। গত বছর শিনজিয়াং অঞ্চলের যে সূত্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সরকারি নথি পাওয়া গিয়েছিল, এবারও সেই সূত্রের মাধ্যমেই নতুন নথিগুলো পাওয়া গেছে।
নথিগুলোতে, ৩১১ জন উইঘুর মুসলমানের ওপর ব্যাপক অনুসন্ধানের অর্থাৎ তাদের পূর্ব ইতিহাস, ধর্মীয় আচার পালনের দৈনন্দিন রুটিন, তাদের আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
প্রতিবেদনের শেষ কলামে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে, ওই ব্যক্তিদের বন্দীশিবিরে আরো রাখা হবে নাকি তাদের ছেড়ে দেয়া হবে, অথবা আগে ছেড়ে দেয়া হয়েছে এমন কাউকে আবার বন্দি শিবিরে ফিরিয়ে আনা হবে কি না।
৫৯৮ নম্বর কলামে হেলচেম নামের ৩৮ বছর বয়সী এক নারীকে বন্দীশিবিরে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তিনি কয়েক বছর আগে বোরকা পরতেন। এটি অতীতের ঘটনার কারণে নির্যাতন-নিপীড়নের একটি উদাহরণ মাত্র।
ঢাকা/শাহেদ/এনএ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন