করোনায় কর্মঘণ্টা কমবে ১৯ কোটি ৫০ লাখ মানুষের
করোনাভাইরাসের কারণে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বিশ্বে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কর্মঘণ্টা কমবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কর্মঘণ্টা কমার এই হার বিশ্বের ১৯ কোটি ৫০ লাখ মানুষের পূর্ণ কর্মঘণ্টার সমান। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কর্মঘণ্টায় কমায় বিভিন্ন আয়শ্রেণির মানুষের বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হবে, বিশেষ করে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। এই ক্ষতির পরিমাণ ৭ শতাংশ, যা ১০ কোটি মানুষের পূর্ণ কর্মঘণ্টার সমান। সেই হিসেবে এই ক্ষতি ২০০৮-০৯ সালে অর্থনৈতিক সংকটে যে ক্ষতি হয়েছিল তাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
এই ক্ষয়ক্ষতির কারণে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে রয়েছে আবাসন ও খাদ্যসেবা, উৎপাদন, খুচরা বিক্রি এবং ব্যবসা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। করোনার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বিশ্বে প্রতি পাঁচ জনে চার জন অর্থাৎ ৩৩০ কোটি শ্রমিকের ওপর প্রভাব পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এর আগে আইএলও বছর শেষে আড়াই কোটি বেকারত্বের যে পূর্বানুমান করেছিল সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে।
আইএলও’র মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, ‘উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় অর্থনীতির দেশে শ্রমিক ও ব্যবসা বিপর্যয়ের মুখে। আমাদেরকে দ্রুত, স্থিরচিত্তে ও একসঙ্গে এগুতে হবে। অধিকার, অতি প্রয়োজনীয়তা এবং পদক্ষেপ টিকে থাকা ও পতনের মধ্যে ব্যবধান গড়তে পারে।’
আইএলও’র একটি গবেষণায় করোনাভাইরাসকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বৈশ্বিক সংকট বলা হয়েছে। এতে এই মহামারির কারণে যে সেক্টর ও অঞ্চলে প্রভাব পড়বে তার উল্লেখ করা হয়েছে।
দেখা গেছে, চিহ্নিত সেক্টরগুলোতে ১২৫ কোটি শ্রমিক তীব্র ও বিপর্যয়কর লে অফ, মজুরি ও কর্মঘণ্টা কর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এদের অনেকেই নিম্ন বেতনের, কমদক্ষ কাজের শ্রমিক, যাদের হঠাৎ আয় কমে যাওয়া মানে নিদারুণ সর্বনাশের।
আঞ্চলিকভাবে দেখতে গেলে এই ঝুঁকিতে রয়েছে আমেরিকার ৪৩ শতাংশ ও আফ্রিকার ২৬ শতাংশ শ্রমিক। এছাড়া বিশ্বব্যাপী অনানুষ্ঠানিক খাতের ২০০ কোটি মানুষ (অধিকাংশ উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির) ঝুঁকিতে রয়েছে।
চারটি স্তম্ভের ওপর বৃহদায়তন,সমন্বিত, নীতি নির্ধারণ প্রয়োজন : ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চাকরি, ও আয়ে সহায়তা, অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে প্রণোদনা, কর্মস্থলে শ্রমিকদের সুরক্ষা এবং সমাধান বের করতে সরকার, শ্রমিক ও নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে সামাজিক সংলাপ।
রাইডার বলেন, ‘৭৫ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। যদি একটি দেশ ব্যর্থ হয় তাহলে আমরা সবাই ব্যর্থ হব। আমাদেরকে অবশ্যই বৈশ্বিক সমাজ, বিশেষ করে যারা সবচেয়ে অরক্ষিত অথবা নিজেদের সহযোগিতা করতে অক্ষম তাদেরকে সহযোগিতার জন্য সমাধান বের করতে হবে।’
ঢাকা/শাহেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন