ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

অভিজিৎ হত্যা : দ্রুত তদন্ত শেষের আশা সিটিটিসি’র

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৮, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অভিজিৎ হত্যা : দ্রুত তদন্ত শেষের আশা সিটিটিসি’র

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিজ্ঞান মনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যাকান্ডের ঘটনার তিন বছরে মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল  ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম।

তিনি আরো বলেন, এ মামলায় আরও পাঁচজনের সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পারলে তদন্ত কাজ শেষ হবে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি তদন্তকাজ শেষ করার বিষয়ে আশাবাদী।

রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিজিৎ হত্যাকান্ডের তিন বছর পূর্ণ হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি। শুরু থেকে মামলাটি ডিবি তদন্ত করছিল। সে সময় র‌্যাব ও ডিবি মিলে এ ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করে এবং মুকুল রানা নামে একজন ডিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

তিনি জানান, প্রায় তিনমাস আগে মামলার তদন্তভার পায় সিটিটিসি। এর পর মোজাম্মেল হোসেন সায়মন, আরাফাত ওরফে শামস ওরফে সাজ্জাদ ও আবু সিদ্দিক ওরফে সোহেল নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। এ তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তাদের জবানবন্দী অনুযায়ী ডিবি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনের মধ্যে তিনজনের এ মামলায় কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এছাড়া তাদের জবানবন্দী অনুযায়ী, আনসার-আল-ইসলামের প্রধান মেজর (বরখাস্ত) জিয়াসহ পাঁচজনকে খুঁজছি আমরা। মেজর জিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে নিজেই অপারেশন পরিচালনা করেছেন। ওই পাঁচজনের মধ্যে ২-৩ জনকে ধরতে পারলে আদালতে চার্জশিট দেওয়া যাবে।

সিটিটিসি প্রধান আরো বলেন, তিনজনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আমরা এ মামলার তদন্তকাজ শেষ করে এনেছি। এখন পর্যন্ত মামলার বিচারকাজ চালিয়ে নেওয়ার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমান পেয়েছি। 

অভিজিৎ হত্যার মূল কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাকে খুন করার পেছনে কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল না। মূলত তার লেখালেখির কারণেই সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিজিৎকে খুন করা হয়। যেহেতু অভিজিৎ বিদেশে ছিল তাই সে কবে দেশে আসবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মনিটরিং করে এবং তাদের ইন্টেলিজেন্স উইং থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সার্ভেইল্যান্স উইং তাকে খুনের পরিকল্পনা করে।

অভিজিৎকে অন্য জায়গায় খুন করার সিদ্ধান্ত থাকলেও সুযোগের অভাবে বই মেলাতেই ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন চালায় তারা। আর এই অপারেশনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ঘটনার সময় আনসার আল ইসলামের প্রধান মেজর জিয়াসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে উাপস্থিত ছিলেন।

মেজর জিয়ার অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সে পলাতক বলেই আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।  কয়েকমাস আগে সে দেশে ছিল, এখন কোথায় আছে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।  দেশে থাকলেও নিষ্ক্রিয় অবস্থায় কোথাও আত্মগোপনে আছে কিংবা বিদেশে রয়েছে।

আনসার আল ইসলামের বর্তমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের কার্যক্রম মূলত অনলাইন বেজড। বর্তমানে কোন অপারেশনাল কর্মকান্ডে নেই বলে আমরা জানি।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একুশে বইমেলার কাছে অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদও আহত হন।  অভিজিৎ রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/নূর/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়