ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘খালেদা জিয়ার সঠিক চিকিৎসা চায় না সরকার’

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ৫ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘খালেদা জিয়ার সঠিক চিকিৎসা চায় না সরকার’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে সেবা নিতে সুযোগ না দেওয়ায় তিনি ‘অধিকার বঞ্চিত’ হচ্ছেন বলে দাবি করেছে বিএনপি। দলটির অভিযোগ, ‘সরকার চায় না তার (খালেদা জিয়া) সঠিক চিকিৎসা হোক।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে প্রশ্নের জবাবে এই অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার যে ন্যূনতম প্রাপ্য অধিকারগুলো তা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তার যখন ডিভিশন প্রাপ্তির কথা ছিল প্রথম কয়েকদিন তা দেওয়া  হয়নি। তাকে একটি পরিত্যক্ত নির্জন একটি কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। একটি সভ্য দেশে এমন কোনো নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

‘তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সেবা নিতে যে আচরণ করা হচ্ছে তাতে এটা পরিস্কার যে, সরকার খালেদা জিয়র সঠিক চিকিৎসা তারা করতে দিতে চায় না। এর একটি মাত্র কারণ তারা তাকে ভয় পায়। কারণ  তিনিই একমাত্র গণতন্ত্র রক্ষা করতে পারেন এবং এই দুঃশাসনকে পরাজিত করতে পারেন’, বলেন বিএনপির মহাসচিব।

বিএনপির নেতাদের ব্যাংক লেনদেনের তদন্তে নামায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল প্রতিষ্ঠানটির ‘দ্বৈত নীতি’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

‘দুদকের একমাত্র কাজ হচ্ছে বিরোধীদলের মামলাগুলো দাড় করানো এবং তদন্তের নামে তাদেরকে রাজনীতি থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা।...কেন? গত দশ বছরে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা যে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন, কয়জনের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত করেছে দুদক? যারা আদালতে সাজা পেয়েছে তাদের সাজা আপনারা (দুদক) দিতে পারেননি। এখনো বহাল তবিয়তে মন্ত্রী আছে, প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

দুই জোটের বাইরে থাকা দলগুলোকে নিয়ে বিএনপির বৃহত্তর ঐক্যের প্রক্রিয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানো সময় আসেনি। রাজনীতির প্রত্যেকটি জায়গার একটা সময় আছে। আমরা কথা বলছি, কথা চলছে। সবাইকে দেশের ও গণতন্ত্রের স্বার্থে একটা জায়গায় আসতে হবে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন সব সময় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ। ইতিহাস যদি দেখেন, সব সময় নির্বাচনকে আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। এজন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোকে আন্দোলনের অংশ হিসেবে অংশ নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা জনগণের কাছে যেতে পারছি, আমাদের কথা তুলে ধরতে পারছি।’

গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ হবে-প্রত্যশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় প্রত্যাশা করি একটি ভালো নির্বাচন হওয়া উচিত। কিন্তু কখনো সেটি হয়না। যে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করে তাদের কোনো ক্ষমতাই নেই। তারা ঠুটো জগন্নাথ। তাদের যে নির্দেশ করে তারা তাই করে।’

গণতন্ত্রের কথা বলে অগণতান্ত্রিক আচরণ করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একদলীয় শাসন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আইনের লোকেরা হুকুম দেয় এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। আমার সন্দেহ হয় যে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে কী আওয়ামী লীগ চালাচ্ছে? তাহলে কে চালাচ্ছে? আমাদের তো মনে হয় কোনো রাজনৈতিক দল দেশ চালাচ্ছে না। অন্য কেউ দেশ চালাচ্ছে।’

‘কারণ একটি রাজনৈতিক দল এভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস করতে পারে না, যার জন্য আমরা আন্দোলন করেছি, যুদ্ধ করেছি, রক্ত দিয়েছি’, বলেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্যাতনের মাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো তত বেশি ঐক্যবদ্ধ হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও জনগণের মুক্তি একই সূত্রে গাঁথা। জনগণ যদি ভোট দিতে পারে তাহলে নৌকা খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘বিএনপির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করা। অবরুদ্ধ মানবাধিকার যা ভুলণ্ঠিত হয়েছে, সেটি প্রতিষ্ঠিত করা। এক্ষেত্রে এক বিন্দুও আমরা পিছপা হবো না। হয় সফলতা, না হয় মৃত্যু। এর বাইরে আর কোনো রাস্তা নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে রুহুল কবির রিজভী, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আবদুস সালাম আজাদ, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ এপ্রিল ২০১৮/রেজা/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়