ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

চারকোল উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করা হবে : পাটমন্ত্রী

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪১, ১৬ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চারকোল উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করা হবে : পাটমন্ত্রী

সচিবালয় প্রতিবেদক : বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, পাটকাঠি থেকে অ্যাকটিভেটেড চারকোল উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে সব ধরনের সহয়তা করা হবে।

বুধবার বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ চারকোল ম্যানুফ্যাক্চারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ একথা বলেন।

পাটমন্ত্রী বলেন, ‘পাটকাঠি থেকে অ্যাকটিভেটেড চারকোল বাংলাদেশে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। যে কারণে কৃষকরা পাট উৎপাদন করে আগের চেয়ে বেশী লাভবান হচ্ছেন। তারা দিন দিন পাট চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। চারকোল উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে সব ধরনের সহয়তা করবে সরকার। পাট থেকে এ ধরনের যত বেশী বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে তত দ্রুত সোনালী আঁশের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’ 

সভায় চারকোলের বিষয়ে জানানো হয় যে, দেশে প্রথম ২০১২ সালে বাণিজ্যিকভাবে পাটকাঠি থেকে অ্যাকটিভেটেড চারকোল উৎপাদন শুরু হয়। ওই বছরই সর্বপ্রথম চীনে এ পণ্য রপ্তানী করা হয়। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চারকোলের চাহিদা রয়েছে। দেশে এ পণ্য উৎপাদনের ব্যাপ্তি বাড়লে আগামীতে জাপান, ব্রাজিল, তুর্কিস্থান, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, কানাডা, মেক্সিকোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চারকোল রপ্তানি সম্ভব হবে।

বর্তমানে বিদেশে চারকোল দিয়ে তৈরি হচ্ছে ফেস ওয়াস, ফটোকপিয়ারের কালি, পানির ফিল্টার, বিষ ধ্বংসকারী ওষুধ, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, দাঁত পরিষ্কার করার ওষুধ। এছাড়া বিভিন্ন পন্য উৎপাদনে এ কার্বন ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১০-১২টি  চারকোল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সানবিম কর্পোরেশন, মাহফুজা এন্ড আহান এন্টারপ্রাইজ, জামালপুর চারকোল লিমিটেড ও রিগারো প্রাইভেট লিমিটেড।

বর্তমানে জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চারকোল উৎপাদন শুরু হয়েছে।

চারকোল ম্যানুফ্যাক্চারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ টন পাটকাঠি উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে যদি ৫০ ভাগ পাটকাঠি চারকোল উৎপাদনে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টন চারকোল উৎপাদন সম্ভব হবে। যা বিদেশে রপ্তানী করে প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার ৫’শ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে সারা দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।

চারকোল ম্যানুফ্যাক্চারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মির্জা জিল্লুর রহমান বলেন, ‘চারকোল শিল্পকে একটি উদীয়মান শিল্প হিসাবে ঘোষণা দিতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও পাটজাত পণ্য হিসাবে ২০ ভাগ ক্যাশ ইনসেনটিভ পাওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এ শিল্প বিকাশে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভূক্ত বা সহযোগী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের সুযোগ দিতে হবে। এ শিল্পের জন্য দ্রুত পৃথক নীতিমালা তৈরী করতে হবে। এছাড়া এ শিল্পের জন্য সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা ও ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

মন্ত্রী এ সকল প্রস্তাব ও পরামর্শ সম্পর্কে বলেন, ‘নতুন এ খাতে যে সব সমস্যা রয়েছে তা সরকার অবগত আছে। এ সমস্যা দূর করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহায়তা করবে। এ বিষয়ে খুব শিগগিরই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। চারকোল শিল্পের বিকাশের জন্য সকল পক্ষের সার্বিক সহযোগিতা চান বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জানুয়ারি ২০১৮/আসাদ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়