ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বন্ডের ৬১ কোটি টাকার কাপড় বাজারে বিক্রি, অডিটে ধরা

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৬, ২১ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বন্ডের ৬১ কোটি টাকার কাপড় বাজারে বিক্রি, অডিটে ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের মাধ্যমে এক বছরে ১৩৬টি চালানে আমদানিকৃত গার্মেন্টসের কাপড় বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে খোলা বাজারে বিক্রির তথ্য উদঘাটন করছে শুল্ক মূল্যায়ন ও অডিটের দল। সন্দেহজনক চালানের শুল্কায়ন মূল্য প্রায় ৬১ কোটি টাকা।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিদর্শন করে ওই অনিয়মের ঘটনা উদঘাটন করা হয়েছে বলে সোমবার শুল্ক মূল‌্যায়ন ও অভ‌্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেটের কমিশনার ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছেন।

শুল্ক মূল্যায়ন দপ্তর জানায়, রাজধানীর আশুলিয়ার লাইলাক ফ্যাশনওয়্যার লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালে প্রায় ১৩৬টি চালানের কন্টেইনার ভর্তি কাপড় শুল্কমুক্তভাবে আমদানি করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে  অডিটের দল গত ১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করলে কর্তৃপক্ষ এসব মালামাল কারখানা প্রাঙ্গণে দেখাতে পারেনি। এমনকি এক সপ্তাহ আগে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে খালাস হওয়া কাপড়ও প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ পূর্বে আনা কাঁচামাল (কাপড়) পোশাক তৈরি করে রপ্তানি করেছে মর্মে কতিপয় কাগজপত্র দাখিল করে। এসব রপ্তানি কাগজ যাচাই করে দেখা যায়, আমদানিকৃত কাপড় ও বিল অব এন্ট্রির তথ্যের মধ্যে ব্যাপক গরমিল।

সূত্র জানায়, প্রাথমিক অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী আমদানিকৃত কাপড়ের পরিমাণ ও মূল্যের মধ্যে সাদৃশ্য নেই। অধিকন্তু দাখিলকৃত কিছু কিছু পিআরসিতে  (২০টি) রপ্তানির গন্তব্যস্থল থেকে না এসে ভিন্ন দেশ থেকে এবং কম মূল্যে রেমিট্যান্স দেখানো হয়েছ, যা অস্বাভাবিক। যেমন: রপ্তানি হয়েছে জাপানে কিন্তু ডলার এসেছে পেরু থেকে। কেন পেরু থেকে এসেছে এবং ক্রেতার সাথে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের (ডলার প্রেরণকারী) সম্পর্ক কী, তার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা নেই। তাছাড়া বেশকিছু সংখ্যক (২৭টি) প্রদর্শিত রপ্তানি চালানের বিপরীতে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসেনি। এতে স্পষ্ট হয়েছে যে, গার্মেন্টস মালিক প্রকৃতপক্ষে পোশাক রপ্তানি না করেই কিছু ক্ষেত্রে নিজের উদ্যোগে ডলার প্রেরণ করে ভূয়া পিআরসি প্রদর্শনের চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে, রপ্তানি শিপিং বিল ও অন্যান্য কাগজপত্রও সন্দেহজনকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এর আগেও প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৪৬টি চালান খালাস করেছে।

মোট সন্দেহজনক চালানের শুল্কায়ন মূল্য প্রায় ৬১ কোটি টাকা। প্রযোজ্য শুল্ককরাদির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে বিস্তারিত অডিট অনুসন্ধান এবং আইনানুগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে আরো বেশকিছু বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ জানুয়ারি ২০১৮/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়