এজলাস ভাগাভাগি করে চলছে বিচার কার্যক্রম
মামুন খান : পুরান ঢাকার নিম্ন আদালতে পর্যাপ্ত সংখ্যক এজলাসের অভাব রয়েছে। পাশাপাশি সংকট রয়েছে নথিপত্র সংরক্ষণ রুমের। ফলে এজলাস ভাগাভাগি করে একাধিক আদালতের বিচারকার্য পরিচালনা করতে হচ্ছে।
বর্তমানে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল ও সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু আদালতের নিজস্ব এজলাস নেই। যার ফলে মামলা পরিচালনা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের ৬ তলায় অবস্থিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারকক্ষ ভাগাভাগি করে চলত সাইবার ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম। সম্প্রতি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ চলছে এ আদালতের কার্যক্রম। সকালে চলে বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারিক কাজ। দুপুরের পর একই এজলাসে চলে সাইবার ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম। অপরদিকে, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এজলাসে সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারকার্য পরিচালনা করেন।
এ ছাড়া ঢাকা আইনজীবী সমিতির অফিসের পাশে অবস্থিত রেবতী ম্যানশনের তৃতীয় তলায় সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর কার্যক্রম শেষে দুপুরের পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর কার্যক্রম শুরু হয়। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের ৫ম তলায় যেখানে আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর এজলাস ছিল, সেখানে বর্তমানে সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এবং দুপুরের পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পুরনো ভবনের ৫ম তলায় সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর কার্যক্রম শেষে দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর কার্যক্রম শুরু হয়। একই ভবনের পঞ্চম তলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর কার্যক্রম শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এর কার্যক্রম শুরু হয়।
ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেরও এজলাস ভাগাভাগি করে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।
নিম্ম আদালতে প্রায় সকল এজলাসে একাধিকবার ভিন্ন বিচারক দ্বারা বিচারকার্য পরিচালিত হয়। এই বিষয়টা এখনকার নিত্যদিনের ঘটনা বলে আদালত কর্তৃপক্ষ জানায়। আদালতে এজলাসের অভাবে এভাবে মামলা পরিচালনা করেন বিচারকরা।
এ বিষয়ে মহানগর এডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, এখনো ঢাকার অনেক আদালতকে কক্ষ ভাগাভাগি করে বিচারকার্য পরিচালনা করতে হয়। এতে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। তারপরও কিছু করার নেই এই মুহূর্তে। নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে। ওই ভবন নির্মাণ শেষ হলে এসব আদালত ওখানে পাঠানো হবে। সেই দিন পর্যন্ত কিছুটা কষ্ট তো করতে হবে।
বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, দেশে একমাত্র সাইবার ট্রাইবুনাল এটি। কিন্তু এটার নিজস্ব এজলাস এখনো হয়নি। যার ফলে মামলা পরিচালনা করতে বেগ পেতে হয়। এর সঙ্গে ভুক্তভোগীদের হয়রানি হতে হয়। মামলার সংখ্যাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান তিনি।
সাইবার ট্রাইব্যুনালের জন্য আদালত তৈরি করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই এর সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি। এ বিষয়ে আইনজীবীরা বলেন, এজলাসের সংকটের কারণে তাদের মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করতে সময় নষ্ট হয়। তাছাড়া একটি মামলার জন্য বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের সারা দিন বসে থাকতে হয়।
তারা বলেন, অতি শীঘ্র বিষয়টি সুরাহা হলে ভালো হয়। এতে আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কম হবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মে ২০১৯/মামুন খান/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন