ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ডেঙ্গু নিয়ে হাইকোর্টের অসন্তোষ

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৬, ১৮ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডেঙ্গু নিয়ে হাইকোর্টের অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেছেন, দুই সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যথাসময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এটা নিলে হয়তো এরকম পরিস্থিতি হতো না। যাদের সঠিকভাবে বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্ব ছিল তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। তাদের মানসিকতা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে।

আদালত আরো বলেন, ডেঙ্গু মশার লার্ভা ও ডিম থাকে পানিতে। উনারা সেটা পরিস্কার না করে রাস্তায় ময়লা ফেলে পরিস্কার করলেন। এটা নেহায়েতই হাস্যকর। এভাবে ডেঙ্গু মশা মারা যায় না।

রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের নেওয়া কার্যক্রম হাইকোর্টকে জানানোর পর আদালত এসব কথা বলেন। তবে এ বিষয়ে আদালত নতুন কোনো আদেশ দেননি।

এসময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কতজন মারা গেছে তা নিয়ে পত্রপত্রিকায় দুইরকম তথ্য দেখছি। সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৪৮ জন। কিন্তু বেসরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৭২ জন। এটা নিয়ে দুইরকম তথ্য কেন?

জবাবে ডিএজি বলেন, সরকারি হিসেবে ৪৮ জন। যারা ডেঙ্গুতে মারা গেছেন তাদের কারো কারো অন্য রোগ থাকতে পারে। কারো হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়।

এসময় আদালত বলেন, ধরে নিচ্ছি, ৪৮ জনই মারা গেছে। যারা মারা গেছে তাদের পরিবারের কি অবস্থা তা একবার ভেবে দেখুন। ডেঙ্গু এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যথাসময়ে যদি প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হতো তাহলে হয়তো এত লোককে মরতে হতো না।  শরীয়তপুর থেকে একজন ঢাকায় সেবা নিতে এসে মারা গেছে। সে যদি গ্রামে থাকতো তাহলে হয়তো তাকে মরতে হতো না।

আদালত বলেন, কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বছরের পর বছর একই ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। অথচ ওই ওষুধে কাজ হচ্ছে না। একটি ওষুধ বারবার ব্যবহার করলে তা সহনীয় হয়ে যায়। এটা বুঝতে হবে। দেখুন না, এখন অ্যারোসল আর ঠিকমতো কাজ করে না।

‘নিজেরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে জনগণের ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। জনগণকে তাদের ঘরবাড়ি পরিস্কার করতে বলা হচ্ছে। সত্যিকারে যেখানে এডিস মশা থাকে সেখানে ওষুধ ছিটালেই তো হয়। জনগণকে সচেতন হতে হবে-এটা ঠিক। কিন্তু সব দায় জনগণের-এমনটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই’ -মন্তব্য করেন আদালত।

এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করতে গেলে আদালত বলেন, আমরাতো কোনো রুল জারি করিনি। আরেকটি আদালত রুল দিয়েছেন। সেখানে রিপোর্ট দিন।

এ সময় ডিএজি বলেন, এই আদালত মৌখিকভাবে এক আদেশে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ জানতে চেয়েছিলেন। তাই সরকার বিষয়টি জানিয়েছেন।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ আগস্ট ২০১৯/মেহেদী/নবীন হোসেন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়