ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মানবাধিকার কমিশনের প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪১, ১১ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মানবাধিকার কমিশনের প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতি কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন। মিরপুরের গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা রিটের রায়ে এ নির্দেশনা এসেছে।

নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-

১.মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে যে খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে সেই বিধিমালাটি সুশীল সমাজের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

২. কমিশনকে আইনের ১৬ ধারা অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  এই ১৬ ধারা অনুসারে কমিশন দেওয়ানী আদালতের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে এবং তদন্ত বা অনুসন্ধানের স্বার্থে সাক্ষী তলব করতে, নথি তলব তলব বা জামিনযোগ্য পরোয়ানাও ইস্যু করতে পারে।

৩.যদি কমিশনের কোনো সুপারিশ সরকার মান্য না করে তাহলে সংশ্লিষ্ট কমিশন আইনের ১৯ ধারা এবং সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হাইকোর্টের নজরে আনতে হবে।

৪. কমিশন থেকে যেসব আদেশ দেয়া হয় সেসব আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি ৩০ দিনের মধ্যে ইস্যু করতে বলা হয়েছে।  এমন মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে তাদের পদ্ধতিগুলো নির্ধারণ করে নিতে হবে।

৫. কমিশনে কোন অভিযোগ আসার পর তা যেন একজন ব্যক্তির স্বাক্ষরে নিষ্পত্তি বা আদেশ দেওয়া না হয়।  কমিশন আইনের ১১(৩) বা ২৮ ধারার নিয়ম অনুসারে যথাযথ ক্ষমতা প্রয়োগ করে আদেশ প্রদানকারীদের নাম ও পরিচয় লিখতে হবে।

৬. খাদিজার বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনকে ৬০ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ সময়ে খাদিজা ও পরিবারের বক্তব্য শুনে খাদিজার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে কমিশনের ১৯ ধারা অনুসারে অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারকে সুপারিশ করতে হবে।

আদালতে মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি অব বাংলাদেশের করা রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। তাকে সহযোগীতা করে অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

পরে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বলেন, রায় ঘোষণাকালে আদালত বলেছেন, এতদিনে হয়ত পুলিশ খাদিজার পরিবারকে পক্ষপাতদুষ্ট করে ফেলেছে, যেটা প্রতিবেদনে দেখা গেছে।  ওই প্রতিবেদনে খাদিজার কোন অভিযোগ নেই এবং তার বাবা সংক্ষুব্ধ নন।  এ কারণে আদালত বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এবং হতাশা প্রকাশ করেছেন। আদালত বলেছেন, পাঁচ বছর পরে একজন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বসে থাকবে না। পুলিশ ইতিমধ্যে তাদের পক্ষপাতদুষ্ট করে ফেলেছে। এরপরও যেহেতু বিষয়টি মানবাধিকার কমিশনে গিয়েছে, তাই কমিশনের এখনও অনেক কিছু করণীয় আছে। তাই কমিশনকে খাদিজার অভিযোগ পর্যালোচনা করে ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারকে সুপারিশ করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে রাজধানীর মিরপুরে গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।  ওই ঘটনায় একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে চিঠি দেয়া হয়।  এরপর পাঁচ বছর কেটে গেলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।


ঢাকা/মেহেদী/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়