১৩ নারীকে পতিতালয়ে বিক্রিই ছিল উদ্দেশ্য
ফাইল ফটো
১৩ রোহিঙ্গা নারীকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ভারতের বিভিন্ন পতিতালয়ে বিক্রির উদ্দেশ্য ছিল আসামিদের। এজন্য তাদের ঢাকায় আনা হয়।
পরে যশোরের বেনাপোল হয়ে ভারত এবং সেখানে মনোনীত দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়া পাচার করা হতো ভাগ্য বিড়ম্বিত ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে।
রাজধানীর বাড্ডা থানার আফতাবনগর থেকে ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে উদ্ধারের মামলায় গ্রেপ্তার সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্য কবির আহম্মেদ এবং এমরানের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকা মট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারী রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ড আবেদনে এমনটাই উল্লেখ করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার এসআই ফেরদৌস আলম।
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘র্যাব-৩ গত ২৬ জানুয়ারি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্র কক্সবাজার রোহিঙ্গা শিবির থেকে কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গা যুবতীর পরিবেশগত অসহায়ত্বকে পুঁজি করেছে। তাদের উন্নত জীবনের মিথ্যা আশ্বাসে প্রলুব্ধ করে ভুল নাম, পরিচয় ও ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্ট তৈরি ও অবৈধ উপায়ে ভিসা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করার জন্য বাড্ডা থানাধীন আফতাবনগররের বাড়ি নং-৪০, রোড নং-২, ব্লক-বি, ৪-এ বাসায় একত্রিত করা হয়েছে। পরে র্যাব সেখানে অভিযান চালিয়ে ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে উদ্ধার এবং দুই জনকে আটক করে।’
র্যাব জানতে পারে- কবির আহমেদ, এমরান ও তাদের সঙ্গীয় আরো সাতজন সংঘবদ্ধভাবে ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে মালয়েশিয়া ভালো বেতনে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুবপালং, বালুখালী এবং টেংখালী ক্যাম্প থেকে আসামি কবির আহম্মেদের ভাড়া বাসায় নিয়ে আসে।
পরে মানবপাচার চক্রের অন্য সক্রিয় সদস্য পলাতক আসামি মো. আইয়ুব হোসেন বিভিন্ন সরকারি অফিসের সাথে যোগসাজসের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন সনদ, সাময়িক জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট তৈরিসহ বর্হিগমনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, মামলার অন্যান্য পলাতক আসামিসহ তারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন প্রসিদ্ধ পতিতালয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে রোহিঙ্গা নারীদের যশোরের বেনাপোল হয়ে ভারত এবং সেখানে তাদের মনোনীত দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়া পাচার করে থাকে।
এদিকে উদ্ধার ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এরা হলেন- সামিরা (১৯), আসমা আক্তার (১৭), কানিজ ফাতেমা (১৬), জমিলা (১৭), তাছলিমা (১৮), নূর বেগম (১৭), নূর হাকিমা (১৮), সাহিদা (১৭), হারেছা (১৬), সানজিদা (১৯), আছমা (২২), সেতারা (২৫) ও আয়েশা (১৭)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার নিরাপদ হেফাজতে রাখার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।
রোববার বেলা ১২টার দিকে আফতাবনগরের বি ব্লকের ২ নাম্বার রোডের ৪০ নম্বর বাসায় র্যাব- ৩ অভিযান চালিয়ে ১৩ রোহিঙ্গা নারীকে উদ্ধার করে। পরে র্যাব-৩ এর সুবেদার রমজান আলী বাড্ডা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন