ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আনিছুর দম্পত্তির ২০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আনিছুর দম্পত্তির ২০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

ফাইল ফটো

যুবলীগের বহিষ্কৃত দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রী সুমি রহমানের ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ২৭টি দলিলে থাকা ওই সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার আদালত থেকে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন। সম্পদের মধ্যে মের্সাস মা ফিলিং স্টেশনেরও নাম রয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, আসামি কাজী আনিছুর রহমান (যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক) বর্তমানে দুবাইতে অবস্থান করছেন। দেশের বিভিন্ন অবৈধ কর্মকাণ্ড সামলাচ্ছেন তার নিজস্ব কিছু ক্যাডার বাহিনীসহ তার শ্যালক শুভ, চাচাতো ভাই মিঠু, চয়ন ও বাবুল। এরাই ধানমন্ডিসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় তার স্থাবর সম্পদের ভাড়া তুলছেন।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর কাজী আনিছুর রহমানের ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ও তার স্ত্রী সুমি রহমানের এক কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের দায়ে মামলা করে দুদক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি কাজী আনিছুর রহমান ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিজ নামে ও বেনামে অর্জিত পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং এক কোটি ৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৮২১ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।

এর মধ্যে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টার লেভেল একটি ফ্ল্যাট, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের রসুলপুরে ২৪.৫০ শতাংশ জমি, ঢাকার আর কে মিশন রোডের আমিন ভবনের পঞ্চম তলায় ১৩০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ঢাকার স্বামীবাগ রোডে ৮২০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডি রোড নং-৭ এ একটি ফ্লাট, ঢাকার শুক্রাবাদের শেরেবাংলা নগর ৭৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, ধানমন্ডি ১৫ নং রোডের একটি ফ্ল্যাটসহ সর্বমোট পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬০০ টাকা স্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

অনুরূপভাবে আরফিন এন্টারপ্রাইজ কোম্পানির শেয়ার মূল্য ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্টেশনের শেয়ার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা, প্রাইজবন্ড তিন লাখ টাকা, গাড়ির মূল্য ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকাসহ সর্বমোট এক কোটি ৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৮২১ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।

বিএফআইইউ থেকে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র অনুসারে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংকে রক্ষিত ব্যাংক এশিয়া, প্রাইম ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউসিবিএল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট, সেভিংস অ্যাকাউন্ট, এফডিআর এইচটিসিসহ বিভিন্ন ফর্মে পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪৯৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।

সব মিলিয়ে ১২ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ৯২০ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। যা আয়কর নথিতে উল্লেখ নেই এবং এসবের সপক্ষে কোনো সুনির্দিষ্ট বৈধ উৎস নেই।

অন্যদিকে আসামি সুমি রহমানের নামে এক কোটি ২৫ লাখ ৫০০ টাকার স্থাবর ও ৫৬ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকার অস্থাবর টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এর পরপরই গত ৩০ সেপ্টেম্বর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করে সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। তার নেতৃত্বে আট সদস্যের টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছেন।

টিমের অপর সদস্যরা হলেন- উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. সালাউদ্দিন, গুলশান আনোয়ার প্রধান, সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম, আতাউর রহমান, মামুনুর রশীদ চৌধুরি ও মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী।

 

ঢাকা/এম এ রহমান/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়