পপির ধারণা সব খরচ শ্বশুর-শাশুড়ির পিছনেই হতো

রাজধানীর দক্ষিণ গোড়ানে দুই সন্তানকে হত্যাকারী মা আক্তারুন্নেছা পপির ধারণা ছিল, স্বামী মোজাম্মেল হক ওরফে বিপ্লব সমস্ত টাকা পয়সা মা-বাবা, ভাই-বোনদের পিছনে খরচ করে।

দুই সন্তান হত্যার ঘটনায় বিপ্লব তার স্ত্রী আক্তারুন্নেছা পপিকে আসামি করে খিলগাঁও থানায় মামলায় দায়ের করেন। এজাহারে এমনটাই উল্লেখ করেছেন তিনি।

এজাহারে বিপ্লব উল্লেখ করেন, ব্যবসায়িক কারণে তিনি গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে থাকেন। প্রতি বৃহস্পতিবার ঢাকায় এসে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে থাকতেন। বড় মেয়ে মেহেজাবিন আলফি ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে চতুর্থ শ্রেণিতে এবং ছোট মেয়ে জুনিয়র প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

তার স্ত্রী পপির ধারণা, তিনি তার সমস্ত টাকা পয়সা গ্রামের বাড়ি শ্রীনগরে থাকা মা-বাবা, ভাই-বোনদের পিছনে খরচ করেন। ব্যবসায়িক কারণে ৪০ লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন বিপ্লব। এছাড়া ২২ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমিও কেনেন তিনি। টাকা পরিশোধ হওয়ার পরও জমির মালিক তাদের ওই জমি তাকে রেজিস্ট্রি করে দেননি। ফলে পপি মনে করে সকল টাকা বিপ্লব তার মা-বাবা, ভাই-বোনদের পিছনে খরচ করেছে। এসব বিষয় নিয়ে তাদের দাম্পত্য জীবনে প্রায়ই ঝগড়া লেগেই থাকতো।

বিপ্লব জানান, ব্যবসার অবস্থা ভাল না থাকায় টানাপোড়েনের মধ্যে ছিলেন তিনি। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকায় এসে পরদিন আমার গ্রামের বাড়ি চলে যান। ৬ মার্চ রাতে পপি বিপ্লবকে ফোন দেন। তখন বিপ্লব জানান, তার ব্যবসার অবস্থা ভালো না। দুই মেয়ে নিয়ে পপিকে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে বলেন। পপি জানান, তিনি ঢাকায় থাকতে চান।

এজাহার থেকে জানা যায়, ৭ মার্চ সকাল ১০ টার দিকে বিপ্লবের শ্বশুর আবু তালেব তাকে ফোন দিয়ে জানান, তাদের বাচ্চা দুইটা আর জীবিত নেই। পপি জবাই করে তাদের মেরে ফেলেছে এবং সে নিজের শরীরে আগুন দিয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

হাসপাতালে গিয়ে বিপ্লব মেয়েদের লাশ সনাক্ত করেন। তিনি জানতে পারেন, ৬ মার্চ রাত ১০টা থেকে ৭ মার্চ সকাল ৯টার মধ্যে যেকোনো এক সময়ে পপি তাদের দুই সন্তানকে বটি-দা দিয়ে কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত‌্যা করে। পরে পপি নিজের শরীকে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।

 

ঢাকা/মামুন খান/সনি