ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সক্রিয় দুদকের ভুয়া কর্মকর্তা!

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২২, ১৪ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সক্রিয় দুদকের ভুয়া কর্মকর্তা!

ফাইল ফটো

২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর। দুদকের হটলাইনে অভিযোগ আসে, একটি চক্র দুদক পরিচালক পরিচয়ে আর্থিক সুবিধা দাবি করছে। বিনিময়ে দুদকের করা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, চক্রটি নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য করতে ইমোতে মামলার এজাহারের ভুয়া কপি পাঠিয়ে দেয়।

পরবর্তীতে ওই তথ্যের উপর ভিত্তি করে অভিযান চালিয়ে কেরানীগঞ্জ থেকে নিপা বেগম এবং মো. দ্বীন ইসলাম নামে দুই প্রতারককে আটক করে দুদক টিম। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে একটি সংবাদ মাধ্যম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীর পরিচয়পত্র জব্দ করে দুদক কর্মকর্তারা।

একই বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজু মিয়া নামের অপর এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। রাজুর নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে দুদকের কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ফোন করে মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করত। টেলিফোন ডিরেক্টরি থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে তারা ফোন করত।

বিশেষ করে স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যানদের টার্গেট করত তারা। পরে মামলার ফাইল বন্ধ করতে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করত। এভাবে চক্রটি প্রায় ১৪ লাখ টাকা হাতিয়েছে।

এমন জালিয়াতির ঘটনা বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে বেরিয়ে আসছে হরহামেশা। কখনো দুদকের উপপরিচালক, মহাপরিচালক কিংবা কখনো সচিব পরিচয় দিয়ে সরকারি বড় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করে, আবার অর্থের বিনিময়ে অভিযোগ থেকে অব‌্যাহতিও দেয় প্রতারক চক্রের এসব সদস‌্যরা।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভুয়া অনুসন্ধানের আদেশ কপি বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ২০২০ সালেও এমন অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে দুদকের অভিযোগ বাক্সে। অভিযানে এমন অনেক ভুয়া কর্মকর্তা দুদকের জালে ধরা পড়ছে ইতোমধ‌্যে।

এ বিষয়ে দুদক পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে একাধিক প্রতারক বা প্রতারকচক্র কমিশনের মামলা অথবা কাল্পনিক মামলা অথবা কাল্পনিক অভিযোগ থেকে অব্যাহতি অথবা অভিযুক্ত করা হচ্ছে জানিয়ে টেলিফোনের মাধ্যমে অনৈতিক অর্থ দাবি করছে।

‘আবার এমন অনেক প্রতারক রয়েছে যারা একইভাবে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এমনকি কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থায় বিভিন্ন অনৈতিক তদবিরের মাধ্যমেও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কমিশন এ জাতীয় কর্মকাণ্ড বন্ধে বহুমাত্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। পুলিশ-র‌্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় এসব প্রতারকদের কাউকে কাউকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে।”

তিনি বলেন, ‘এসব প্রতারকদের আইন-আমলে আনা একটি জটিল প্রক্রিয়া। যা বাস্তবায়নে কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।’

যদি কোনো ব্যক্তি কমিশনের কর্মকর্তা কিংবা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে টেলিফোন করে বা ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে কমিশনের কর্মকর্তা বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্বজন পরিচয় দিয়ে অনৈতিক কোনো বিষয়ে তদবির করে, তাহলে টেলিফোনের সত্যতার নিশ্চয়তা এবং প্রতিকার পাওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে দুদকের পরিচালক (গোয়েন্দা) মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী (মোবাইল নং- ০১৭১১-৬৪৪৬৭৫) অথবা পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য (মোবাইল নং-০১৭১৬-৪৬৩২৭৬) এর সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে বলে জানান প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য।


ঢাকা/এম এ রহমান/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়