‘৪০০ মানুষকে লিবিয়ায় পাচার করেছে কামাল’
মো. কামাল উদ্দিন ওরফে হাজী কামাল (৫৫)। মানবপাচারই তার পেশা। ১০-১২ বছরে সে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশিকে লিবিয়ায় পাচার করেছে। এছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অনেক মানুষ পাচার করেছে কামাল। তদন্ত করে এসব তথ্য জানতে পেরেছে র্যাব।
র্যাবের তদন্তে আরো জানা গেছে, কামাল টাইলস কনট্রাক্টর। অনেক টাইলস মিস্ত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় ও যোগাযোগ আছে। কামাল তাদের (মিস্ত্রী) বলত, বাংলাদেশে তোমরা দৈনিক ৫০০-৮০০ টাকা আয় করতে পারো। লিবিয়ায় গেলে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় করতে পারবে। লিবিয়ায় টাইলস মিস্ত্রীদের অনেক চাহিদা। লিবিয়ায় যেতে হলে আগে ১ লাখ টাকা আমাকে দিতে হবে। বাকি ৪ লাখ টাকা লিবিয়াতে পৌঁছানোর পর আমাকে দিতে হবে।
এভাবে প্রলোভন দেখিয়ে শ্রমিকদের লিবিয়ায় পাচার করে কামাল। শ্রমিকরা লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর সেখানে অন্য পাচারকারী দলের সদস্যরা তাদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা দাবি করে। শ্রমিকদের শারীরিক নির্যাতন করে এর ভিডিও তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো হয়। সরাসরি মোবাইল ফোনেও যোগাযোগ করে। জিম্মিদের জীবন বাচাঁনোর জন্য চাহিদা মোতাবেক টাকা পাঠায় তাদের পরিবার। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে আরো কঠোর নির্যাতন করা হয়।
র্যাবের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, মানবপাচারকারী চক্র বিদেশ গমনেচ্ছুকদের নির্বাচন করে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় নেয়। সেখান থেকে ইউরোপে পাচার করা হয় তাদের। এর মধ্যে তাদের নির্যাতন চালিয়ে আদায় করা হয় বিপুল পরিমাণ টাকা। এ চক্রের কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা বিদেশে মানুষ পাচার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তাদের নাম-পরিচয় করতে চান না র্যাবের কর্মকর্তারা।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সোমবার (১ জুন) গুলশানের শাহজাদপুর থেকে কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে চক্রের বাকি সদস্যদের পরিচয় জেনে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। কেননা, তাদের জন্য দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের কেউ থানায় অভিযোগ করলে কামালকে সে মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
আরও পড়ুন>> তিন ধাপে অবৈধভাবে ইউরোপে পাঠায় দালাল
ঢাকা/মাকসুদ/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন