লিবিয়ায় যুবক পাচার: তিন জনের দোষ স্বীকার
রাকিব নামে এক যুবককে লিবিয়ায় নিয়ে পাচারের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিন আসামি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলায় আরেক আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (২১ জুন) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নি.) এস এম গফফারুল আলম চার আসামিকে আদালতে হাজির করেন। এর মধ্যে জাহাঙ্গীর হোসেন, বাদশা ফকির ও কবির হোসেন স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন এবং অপর আসামি নাছির উদ্দিনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এ সময় ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তিন আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। আর মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ আসামি নাছির উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৮ জুন জাহাঙ্গীর হোসেন ও বাদশা ফকিরের পাঁচদিন এবং ১৪ জুন সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১৭ জুন কবির হোসেন ও নাছির উদ্দিনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এর আগে মামলাটিতে মহসিন হাওলাদার নামে এক আসামি দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
রাকিবকে পাচারের ঘটনায় তার বাবা মান্নান মুন্সি গত ৫ জুন পল্টন থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- মনির হাওলাদার, মহসিন হাওলাদার, খোকন হাওলাদার, জাহাঙ্গীর, বাদশা ফকির, কবীর, শরীফ, লিবিয়ায় অবস্থানকারী মুন্না, রহিম বেঙলি, আলামিন, রুবেল, আরিফ, শাকিল, সাইফুল, মানিক, আব্দুল্লাহ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ‘মনির হাওলাদার লিবিয়ায় থাকতো। সে বিভিন্ন সময়ে লিবিয়ায় লোক নিয়েছে। মান্নান মুন্সি তার ছেলে রাকিবকে লিবিয়ায় পাঠানোর প্রস্তাব দিলে মনির হাওলাদার রাজি হয়। গত বছরের জুন বা জুলাই মাসের দিকে মনির হাওলাদার রাকিবকে লিবিয়ায় পাঠায়। প্রথমে সাড়ে তিন লাখ টাকায় লিবিয়ায় নেওয়ার কথা হলেও আসামিরা পরে আরও সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকার জন্য তারা রাকিবকে নির্যাতন চালায়। ভিটে বাড়ি বিক্রি করে আর সাড়ে তিন লাখ টাকা পাঠায় পরিবার। সাত লাখ ৫ হাজার টাকা দেওয়ার পরও আসামিরা রাকিবকে ছাড়ে না। তারা আরও ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। রাকিবকে নির্যাতন করে মান্নান মুন্সির সঙ্গে কথা বলতে দিতো আসামিরা। তখন রাকিব চিৎকার চেঁচামেচি করে বাঁচার আকুতি জানাতো। টাকা দিতে না পারায় রাকিবকে মারধর করে আসামিরা এবং এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার।’
গত ২৮ মে লিবিয়ায় মানবপাচারকারীদের হাতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ১২ জন আহত হন। ১৫ দিন আগে লিবিয়ার বেনগাজী থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে ত্রিপলিতে নেওয়া হচ্ছিল ৩৮ বাংলাদেশিকে। পথেই তাদের জিম্মি করে সন্ত্রাসীরা। এর মধ্যে ২৬ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা দায়ের করা হয়।
ঢাকা/মামুন/জেডআর
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন