ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সাক্ষাৎকারে কঠিন প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ২৬ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাক্ষাৎকারে কঠিন প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে

আহমেদ শরীফ : আমরা অনেকেই চাকরির ক্ষেত্রে এমন কিছু ইন্টারভিউয়ের মুখোমুখী হই, যেখানে প্রশ্নকর্তা আমাদের বিভ্রান্ত করেন। মনে হয়, আপনি যা বলছেন, তার সবকিছুরই ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আপনাকে কোণঠাসা করা হচ্ছে। এ ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করবেন আপনি? প্রথমত বোঝার চেষ্টা করুন, প্রশ্নকর্তার বৈরিতা হয়তো আপনার বিরুদ্ধে নয়। হয়তো ইন্টারভিউ বোর্ডে আসার আগে তার সাথে তার স্ত্রী বা কোনো সহকর্মীর মনোমালিন্য হয়েছে, অথবা তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে তেমন সুস্থ নন ঐ দিনের জন্য। তাই রূঢ় আচরণ করছেন তিনি। হতে পারে, ইন্টারভিউ নেয়ার সঠিক পদ্ধতি তিনি জানেন না। আবার এমনও হতে পারে তার চরিত্রটাই হয়তো এমন। বিষয় যাই হোক, এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আপনাকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

ভুল উত্তর সংশোধন করুন: কোনো প্রশ্নের উত্তরে যদি প্রশ্নকর্তার ভ্রু কুঁচকে যায়, অসন্তুষ্টি প্রকাশ পায় তার চেহারায়, তবে দ্রুত বোঝার চেষ্টা করুন আপনার উত্তরে কোনো ভুল ছিলো কি না। আতঙ্কিত হবেন না। বরং বিনয়ের সাথে প্রশ্নকর্তাকে জিজ্ঞেস করুন- ‘আমি কি এ প্রশ্নের উত্তর আবারো  দিতে পারি?’ এতে প্রশ্নকর্তা তার অসন্তুষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করার সময় পাবেন এবং আপনিও আপনার উত্তর নতুন করে দেয়ার সুযোগ পাবেন। যেকোনো ধরনের বিভ্রান্তি দ্রুত সংশোধনের চেষ্টা করা জরুরী, নয়তো ইন্টারভিউয়ের ধারা থেকে ছিটকে পড়তে পারেন আপনি। তখন হয়তো ফেরার পথ পাওয়া যাবে না।

নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সামলে উঠুন: ধরুন, প্রশ্নকর্তা আপনাকে জিজ্ঞেস করলেন, কাজের ক্ষেত্রে কোনো চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবেলা করেন আপনি?  এর উত্তর দেয়ার পর প্রশ্নকর্তা বললেন, ‘আমি আপনার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে একমত নই। আমাদের অফিসে এভাবে সমস্যা সমাধান করা হয় না।’ এ ক্ষেত্রে প্রশ্নকর্তাকে স্পষ্ট বুঝতে দিন  প্রতিটি কোম্পানির অভ্যন্তরীণ পরিবেশ যে ভিন্ন সেটি জানেন আপনি। পরে ঐ কোম্পানির আঙ্গিকে কীভাবে সমস্যা সমাধান করবেন সেটি আবার গুছিয়ে বলুন। এতে হয়তো ইন্টারভিউতে টিকে থাকার দ্বিতীয় সুযোগ পাবেন আপনি। পাশাপাশি প্রশ্নকর্তার বিরোধী মনোভাবও হয়তো দূর হবে। এতে আপনার নমনীয়তা ও দ্রুত চিন্তা করার গুণ প্রমাণ হবে।

ইন্টারভিউ মানে কথোপকথন, জিজ্ঞাসাবাদ না:  আপনাকে যদি প্রশ্নকর্তা একের পর এক প্রশ্ন করে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেন, তাহলে ধৈর্য হারাবেন না। যথা সম্ভব উত্তর দিন। পাশাপাশি একটি প্রশ্ন তৈরি করে রাখুন মনে মনে। যেমন, প্রতিষ্ঠান নতুন পণ্য বাজারজাত করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয় অথবা আগামী পাঁচ বছর পর প্রতিষ্ঠান কোন পর্যায়ে পৌঁছুবে বলে প্রশ্নকর্তা মনে করেন। এতে প্রশ্নকর্তার কথা বলার বিষয় ও ধরন যেমন পাল্টাবে, তেমনি আপনার সম্ভাব্য চাকরি ক্ষেত্র সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যও তার কাছ থেকে জানতে পারবেন আপনি। মনে রাখতে হবে, ইন্টারভিউ মানেই এক তরফা জিজ্ঞাসাবাদ না। বরং এটি এক ধরনের ব্যবসায়িক কথোপকথন।

সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় যে ধরনের অভিজ্ঞতাই হোক, কখনো প্রশ্নকর্তার বৈরী আচরণের জবাবে আপনিও বৈরী আচরণ করবেন না। এতে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আক্রমণাত্মক প্রশ্নকর্তাকে নিয়ন্ত্রণ করার  সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ইন্টারভিউ বোর্ডে নিজের ধৈর্য্য বজায় রেখে প্রতিভার প্রমাণ দেয়া।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ আগস্ট ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়