ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

স্বাস্থ্যকর ভেবে সন্তানকে যেসব খাবার দিচ্ছেন

আহমেদ শরীফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১০, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বাস্থ্যকর ভেবে সন্তানকে যেসব খাবার দিচ্ছেন

প্রতীকী ছবি

আহমেদ শরীফ : সন্তান লালন-পালন করা বিরাট এক ধৈর্যের কাজ। বাবা-মা হিসেবে আপনার ছোট্ট সোনামনির জন্য সবচেয়ে ভালো স্বাস্থ্যকর খাবারটাই বেছে নিতে চান আপনি। আর সে কাজটা খুব কঠিন। কারণ আপনার সন্তানের জন্য যা বেছে নিচ্ছেন তা খুব নিরাপদ হওয়া চাই। ছোট্ট সোনামনির বেড়ে উঠার জন্য স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর খাবারই হয়তো তুলে দিচ্ছেন তার মুখে। তবে আপনি হয়তো জানেনই না, কিছু স্বাস্থ্যকর খাবার তার জন্য উল্টো ক্ষতির কারণই হতে পারে। সেসব খাবার সম্পর্কে জেনে নেই চলুন।

অপাস্তুরিত দুধ : ছোট বাচ্চাদের দ্রুত বেড়ে উঠার জন্য দুধ খুব জরুরি খাবার। তাই তাদেরকে সব সময় মায়ের দুধ ছাড়াও পরবর্তীতে গরুর দুধ খাওয়াতে হয়। তবে এক্ষেত্রে পাস্তুরিত বা ফুটানো দুধ দেয়া উচিৎ। তাতে হজমের এনজাইম ও পুষ্টি অক্ষত থাকে। কেউ কেউ না ভেবেই অপাস্তুরিত দুধ পান করতে দেন শিশুকে। শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকার কারণে অপাস্তুরিত দুধে থাকা জীবাণু সহজেই রোগাক্রান্ত করে ফেলতে পারে শিশুকে।

সাদা পাউরুটি : সাদা পাউরুটিতে গ্লুটেন নামের প্রোটিন থাকে প্রচুর পরিমাণে। এটি সহজে হজম হয় না। আর হজম শক্তি দুর্বল থাকে বলে ৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য এই প্রোটিন হজম করতে কষ্ট হয়।

পিৎজা : বিশ্বের প্রায় সব দেশেই জাংক ফুড হিসেবে পিৎজা খুব জনপ্রিয়। তবে আপনি কি জানেন এ খাবার কতোটা অস্বাস্থ্যকর? পিৎজায় প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, লবণ ও ক্যালরি থাকে, যা শিশুদের জন্য এমনকি টিনএজারদের জন্য খুব ক্ষতিকর।

ক্যান্ডি : ক্যান্ডিতে কৃত্রিম রং, ফ্লেভার ও প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। শিশুদের হজমশক্তি দুর্বল হওয়ার কারণে চিনির বিকল্প এসব উপাদান তারা হজম করতে পারে না। তাই ক্যান্ডি খাওয়ার কারণে শিশুর পাকস্থলীতে ব্যথা দেখা দিতে পারে। আর মুখে বেশিক্ষণ ক্যান্ডি থাকার কারণে শিশুর দাঁতে ক্যাভিটি মানে ক্ষয়রোগও সৃষ্টি করে।

পেস্ট্রি, কুকিজ, কেক : পেস্ট্রি ও কেকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। এসব খাবারে তেমন পুষ্টিগুণ না থাকলেও প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বড়দের জন্যই চিনি যখন খুব ক্ষতিকর, সেক্ষেত্রে শিশুদের জন্য আরো বেশি ক্ষতির কারণ হয় এসব খাবার।

কার্বোনেটযুক্ত পানীয় : শিশুর জন্য এই ধরনের পানীয় বা সফট ড্রিংকস সবচেয়ে ক্ষতিকর। অ্যারেটেড বা কার্বোনেটযুক্ত পানীয়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও ক্যালরি থাকে, যা খুব অস্বাস্থ্যকর। শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে এ ধরনের পানীয়।

ব্রেকফাস্ট সেরেয়াল: বাজারে যেসব ব্রেকফাস্ট সেরেয়াল পাওয়া যায়, তা শিশুদের মন ভোলাতে অনেক কালারফুল করে তৈরি করা হয়। তবে এতে থাকা প্রচুর পরিমাণে চিনি শিশুকে নিদ্রাহীন ও অসুস্থ করে তুলতে পারে।

মাইক্রোওভেন পপকর্ন : তাৎক্ষণিকভাবে তৈরি পপকর্ন আপনার শিশুর জন্য খালো খাবার না। কারণ দুই মিনিটে তৈরি করা পপকর্নে পারফ্লুরোওকটানোয়িক এসিড থাকে, যা পপকর্নকে আগুনে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। আর এই এসিড শিশুর বয়ঃসন্ধি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

মধু : মধুতে ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা বটুলিজম (ফুড পয়জনের মাধ্যমে সৃষ্ট মারাত্মক এক রোগ) সহ বড় ধরনের রোগ তৈরি করতে পারে। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব দুর্বল থাকে। তাই ওই বয়সে তাকে মধু না খাওয়ানোই উচিৎ।

সস: বাজারে যেসব সস পাওয়া যায়, সেগুলোতে প্রিজারভেটিভ ও অন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকে। এতে যে ফ্লেভারিং উপাদান দেয়া হয়, তা শিশুর হজমের জন্য ক্ষতিকর।

তাই আপনি যদি এসব খাবার শিশুকে অসচেতনতায় খেতে দিয়ে থাকেন, তাহলে এখন থেকেই সেগুলো শিশুর কাছ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন, যাতে সে সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ ডিসেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়