শোবার ধরন বলবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক
প্রতীকী ছবি
মুখ দেখে মানুষ কেমন বলে দেয়া যায়। তাই বলে, ঘুমের ধরন দেখেও বলা সম্ভব? বিজ্ঞান বলছে সম্ভব।
একে অন্যের পেছন ফিরে ঘুমানো: স্ত্রী বা স্বামীর দিকে পেছন ফিরে দূরত্ব বজায় রেখে ঘুমানো রোমান্টিক ব্যাপার নয়। তবুও এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ দম্পতি এভাবে ঘুমাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কর্নি সুইট মনোবিজ্ঞানী। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ঘুমানোর এমন ধরন থেকে বোঝা যায় তাদের সম্পর্ক বেশ নিরাপদ এবং সুসংবদ্ধ। তাদের সম্পর্কে স্বাধীনতা এবং নৈকট্যের সুন্দর মেলবন্ধন আছে।’
সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানো: যে কোনো দম্পতির ঘুমানোর ক্ষেত্রে এটি ক্লাসিক স্টাইল। কর্নি সুইটের গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮ শতাংশ দম্পতি ঘুমানোর সময় সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমান। তিনি বলেন, এই ধরন দ্বারা একজন যে আরেকজনের প্রতি রক্ষাশীল সেটি প্রকাশ পায়। তবে সবসময় যে এমন ঘটে তা নয়। এ বিষয়ে গবেষক প্যাটি উড বলেন, ‘এটা অনুভূতিমূলক ব্যাপার। দম্পতিদের শোবার এই ধরন বেশ কিছুটা যৌনপ্রবণ এবং বিশ্বাস নির্ভর।’ তবে ঘুমানোর এই ধরন অনেকসময় প্রতিযোগিতায় রূপ নেয়। ধরা যাক আপনি সঙ্গীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছেন, আপনি অথবা আপনার সঙ্গী যদি পাশ ফিরে ঘুমায় তাহলে আপনাদের মধ্যে এভাবে জড়িয়ে ধরে শোয়া নিয়ে প্রতিযোগিতা তৈরি হতে পারে।
একে অপরের পিঠ স্পর্শ করে শোয়া: ভালোবাসার ক্ষেত্রে আসলে নির্ধারিত কোনো শারীরিক ইঙ্গিত থাকে না। অনেকসময় আপনি এবং আপনার সঙ্গী পরস্পরের পিঠ স্পর্শ করে শোবার মাধ্যমেও চরম ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেন। কর্নি সুইটের গবেষণা অনুযায়ী, ঘুমানোর এই ধরনটি জনপ্রিয়তার দিক থেকে দ্বিতীয়। এর অর্থ হলো দম্পতির মধ্যে উভয়ই একে অপরকে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে এবং সুখে আছে। নতুন সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে এমন বেশি হয়।
প্রথমে কাছাকাছি, পরে দূরে: দম্পতিদের মধ্যে যারা এভাবে ঘুমান তারা সাধারণত প্রথমদিকে একে অন্যের হাত-পা, শরীর জড়িয়ে ধরে মুখোমুখি থাকেন এবং ১০ মিনিট পর যে যার মতো শুয়ে পড়েন। গবেষক সুইট এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি ঘনিষ্ঠতা এবং স্বাধীনতার মধ্যে একপ্রকার সমঝোতা। গবেষণা অনুযায়ী ৮ শতাংশ দম্পতি এভাবে ঘুমিয়ে থাকেন।
বিছানা একজনের দখলে থাকা: দম্পতিদের যে কোনোভাবে ঘুমানোর মধ্যে কিন্তু ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ নেই। ঘুম ভেঙে মাঝরাতে আপনি যদি দেখেন আপনার সঙ্গী বিছানাজুড়ে ঘুমোচ্ছে, তখন আপনি বিরক্ত হতে পারেন। গবেষণা বলে, এক্ষেত্রে একজন বিছানার দখল নিয়ে থাকেন এবং অন্যজন বাধ্য হয়ে সহ্য করেন।
সঙ্গীর বুকে মাথা রেখে ঘুমানো: দম্পতিদের শোবার এই ধরনকে অনেকসময় মধুচন্দ্রিমা পর্যায়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়। শোবার এই মধুর ধরনটি নতুন নতুন সম্পর্ক এবং জোড়া লাগা সম্পর্কগুলোতে বেশি দেখা যায়। কর্নি সুইটের মতে, মাত্র ৪ শতাংশ দম্পতি এভাবে ঘুমায়।
সারারাত অন্তরঙ্গভাবে ঘুমানো: অনেক দম্পতি আছেন যারা সারারাত অন্তরঙ্গ হয়ে ঘুমান। কর্নি সুইটের মতে, এভাবে ঘুমানো সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেকটা বিপদ সংকেতের মতো। এর অর্থ হচ্ছে আপনাদের সম্পর্কে দুজনের ক্ষেত্রেই স্বাধীনতার অভাব রয়েছে। এ কারণে আপনারা দুজন অন্তরঙ্গ হওয়ার চাহিদা অনুভব করেন।
মুখোমুখি ঘুমানো: পরস্পর মুখোমুখি ঘুমানোর অর্থ হচ্ছে আপনাদের সম্পর্কটি বেশ আবেগঘন। ড. সুইট বলেন, শোবার এই ধরনটি আন্তরিকতা এবং চরম নৈকট্য প্রকাশ করে। ঘুমের মধ্যেও আপনারা একে অপরের কাছে আরো ভালোবাসা চাইছেন এমন মনে হয়।
ঢাকা/ফিরোজ/তারা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন