ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দুদকের চিঠিতে সাংবাদিকদের প্রতিবাদ

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ৩০ জুন ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দুদকের চিঠিতে সাংবাদিকদের প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ অনুসন্ধানে সাক্ষ্য দিতে দুই সাংবাদিককে ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় চিঠি দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ (ক্র্যাব) অন্যান্য সংগঠনের সাংবাদিকরা।

রোববার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধনে অংশ নেন নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধনে অবিলম্বে ওই চিঠি প্রত্যাহার না করলে কঠোর আন্দোলনে যাবে এমন হুঁশিয়ারি দেন তারা।

পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর অনুসন্ধানের প্রয়োজনে সাক্ষ্য দিতে ক্রাবের সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার এবং প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক ইমরান হোসেন সুমনকে দুদকে হাজির হওয়ার নোটিশ দেয় দুদক। তবে দীপু সারওয়ারকে দেওয়া চিঠিতে হাজির না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। যা ইমরানকে দেওয়া চিঠিতে ছিল না। এরপর থেকেই প্রতিবাদের নামে সাংবাদিকরা।

যদিও দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য দাবি করেছেন, দুদকের নির্ধারিত ফরমেট অনুসারে সাক্ষ্য দিতে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময় রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের সাক্ষ্য নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা হাজির হয়ে তাদের বক্তব্য দিয়েছে। এটি নতুন কিছু নয়। তবে একটি চিঠিতে দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তার ভাষাগত ভুল করেছেন। এজন্য তাকে শোকজ করা হয়েছে।

মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি আবু জাফর সূর্য বলেন, একজন পরিচালক অত্যন্ত সচেতনভাবে গনমাধ্যমকে দুদকের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। দুদকের সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করেছেন। আপনারা নিজেরা পরিশুদ্ধ হোন, তা না হলে প্রতিষ্ঠনটির প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। শিগগির চিঠির আপত্তিকর শব্দগুলো প্রত্যাহার করতে হবে।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় যত কঠিন কর্মসূচী দিতে হয়, দেয়া হবে। আমরা আশা করবো, যতো দ্রুত সম্ভব এ আগুন নেভানোর চেষ্টা করুন।

ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাওয়ার এটি কোন নমুনা হতে পারে না। স্বাক্ষী না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি? তার মানে কি? এ প্রতিষ্ঠানের ভেতরে একটি সরকার বিরোধী গ্রুপ আছে। যারা সরকারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মুখোমুখি করার পায়তারা করছে। প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলন করে আপত্তিকর চিঠি প্রত্যাহারে বাধ্য করা হবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ভুলন্ঠিত হতে দিতে পারিনা। সেখান থেকে সরে আসার আবারো বিনীত অনুরোধ করছি। সাধারন মানুষ দুদকের অনেক কর্মকর্তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। অবিলম্বে এই চিঠি প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে এবং চিঠি প্রদানকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে এই আন্দোলন চলবে।

ডিআরইউর সাবেক সাধারন সম্পাদক মুরসালিন নোমানী বলেন, দুদক কোনভাবেই অনৈতিকভাবে চিঠি দিয়ে সাংবাদিককে তলব করতে পারেন না। অবিলম্বে আপত্তিকর এ চিঠি প্রত্যাহার করে, ক্ষমা না চাইলে সাংবাদিকরা আরো বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলবে।

মানববন্ধনে ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিআরইউ'র সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল বারীসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২৫ জুন দুদকের পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের প্রধান শেখ মো. ফানাফিল্যা স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে তাদের ২৬ জুন (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছিল। এরই মধ্যে ইমরান হোসেন সুমন যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে দুদককে তার বক্তব্য প্রদান করেছেন।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ জুন ২০১৮/নূর/রহমান/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়