ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রামের জয় রুখে দিলেন রাজিন

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১০, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রামের জয় রুখে দিলেন রাজিন

ম্যাচসেরার পুরস্কার নিচ্ছেন রাজিন সালেহ ।। ছবি : জনি সোম

ক্রীড়া প্রতিবেদক, সিলেট থেকে : শিরোপা নির্ধারণ, দ্বিতীয় স্তর থেকে প্রথম স্তরে উন্নীত এবং প্রথম স্তর থেকে দ্বিতীয় স্তরে কোন দলের অবনমন হচ্ছে তা আগেই নির্ধারিত হয়ে ছিল। তাই ওয়ালটন ১৯তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের শেষ রাউন্ডের লড়াইটা ছিল অনেকটাই আনুষ্ঠানিকতা।

আনুষ্ঠানিকতা বললে ভুল হবে, নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রাউন্ড ছিল এটি। আগের রাউন্ডে প্রায় শিরোপা নিশ্চিত করা খুলনা শেষ রাউন্ডে ঢাকাকে হারিয়ে জয় উৎসব করেছে। রাজশাহী ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ড্র করে প্রথম স্তরে উঠে এসেছে। আর প্রথম স্তর থেকে অবনমন হয়েছে ঢাকা বিভাগের।

দ্বিতীয় স্তরে সিলেট ও চট্টগ্রামের ম্যাচটি নিরুত্তাপ ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ ম্যাচটিই সবথেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হলো। ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ হলো চতুর্থ দিনের শেষ প্রান্তে, পড়ন্ত বিকেলে। পুরো তিনদিন এগিয়ে থেকেও সিলেটের থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিতে পারেনি চট্টগ্রাম বিভাগ। ফলে কোনো ম্যাচ না জিতে এবারের মতো লিগ শেষ করল চট্টগ্রাম বিভাগ।

 


চট্টগ্রামের প্রত্যাশিত জয় রুখে দিয়েছেন সিলেটের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান রাজিন সালেহ। ২২ গজের ক্রিজে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে চট্টগ্রামের বোলারদের আশাহত করেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। তার দায়িত্বশীল, দুর্দান্ত ইনিংসে সিলেট পুরো ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও ড্র করেছে।

শনিবার শেষ দিনে চট্টগ্রামের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৮ উইকেটের। আর সিলেটের লাগত ৩৮১ রান। এতো রানের লক্ষ্য শেষ দিনে তাড়া করে জয় পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই উইকেটে টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তৃতীয় দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ইমতিয়াজ হোসেন তান্না ও এনামুল হক জুনিয়র।

কিন্তু দিনের খেলা শুরু হওয়ার বিশ মিনিটের মধ্যেই দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে। সিলেটের অধিনায়ক তান্না বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান রানার বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন। নাইটওয়াচম্যান এনামুল হক জুনিয়রেরও একই পরিণতি।

দ্রুত ২ উইকেট তুলে শুরুতেই এগিয়ে চট্টগ্রাম। সেখান থেকেই প্রতিরোধ গড়া শুরু রাজিনের। তার সাথে জাকির হাসান, শাহানুর আহমেদ ও জাকির আলী অনিক- এ তিন ক্রিকেটারের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মুমিনুল হকের দলের জয়ের স্বপ্ন ভেস্তে যায়।

 


প্রথমে জাকির হাসানকে (৩২) নিয়ে ১১৮ বলে ৫১ রানের জুটি গড়েন রাজিন। ষষ্ঠ উইকেটে তাকে সঙ্গ দেন শাহানুর। চা-বিরতির এক ঘন্টা আগে আউট হন শাহনুর (৮৯ বলে ৯)। এর আগে তাদের জুটিতে আসে ১৫৮ বলে ৪১ রান। এ সময়ে রাজিন তুলে নেন ফিফটি। শেষটা রাঙিয়ে দেন জাকির আলী অনিক ও রাজিন। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানকে নিয়ে ২৩৪ বলে ১১৯ রান করেন অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যান। দিনের শেষ প্রান্তে মুমিনুলের বলে এগিয়ে এসে লং অন দিয়ে ছক্কা মেরে ৯৮ থেকে ১০৪ রানে পৌঁছান রাজিন সালেহ। পরের ওভারে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে রাজিন আউট হলেও ততক্ষণে ম্যাচের ফলাফল ড্র নিশ্চিত।

১৫২ বলে ফিফটি ছোঁয়া রাজিন ক্যারিয়ারের ১৭তম সেঞ্চুরি পেয়েছেন ২৫১ বলে। ১২ চার ও ৩ ছক্কায় সাজান ম্যাচসেরা নির্বাচিত হওয়া ইনিংসটিকে। সাড়ে পাঁচ ঘন্টা উইকেটে থেকে চট্টগ্রামের জয় শুধু আটকাননি, নিজের ব্যাটিংয়ের জাতও চিনিয়েছেন। অসাধারণ ধৈর্য্য, নিঁখুত ব্যাটিং ও দৃঢ় মনোবল; তিনের মিশেলে গড়া রাজিনের ১৭তম ফার্স্ট ক্লাস সেঞ্চুরি। সিলেট স্টেডিয়ামে তাই রাজিনকে কোলে তুলে উল্লাস করল রাহী-জাকির-সায়েমরা।

 

 

রাইজিংবিডি/সিলেট/২৩ ডিসেম্বর ২০১৭/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়