ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ভাষাশহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিনম্র শ্রদ্ধা

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:২৭, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভাষাশহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিনম্র শ্রদ্ধা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং এরপর প্রধানমন্ত্রী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদেরকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও পরম মমতায় শ্রদ্ধা জানাল জাতি।

শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে বাংলা বর্ণমালার সৈনিকদের অবদান ও সংগ্রামের দিনগুলোকে স্মরণ করল বাংলাদেশ। রক্ত দিয়ে যে মিনার গড়েছেন ভাষাশহীদ-সংগ্রামীরা, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি পেয়েছিল ভাষার অধিকার, সেইসব শহীদ স্মরণে প্রথম প্রহরে জেগে উঠেছে সব শহীদ মিনার।

‘একুশ মানে মাথা নত না করা’ এই প্রত্যয়ের প্রতিধ্বনিতে রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত, শফিউরদের স্মরণ করছে পুরো জাতি।

রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের এই দিনে বাঙালির রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল রাজপথ। রক্তের দামে এসেছিল বাংলার স্বীকৃতি আর তার সিঁড়ি বেয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।

মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালির এই আত্মত্যাগের দিনটি এখন আর বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়; ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে সারা বিশ্বে।

একুশের প্রথম প্রহরে ভাষাশহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ভাষাশহীদ ও সংগ্রামীদের ত্যাগ স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর একে একে শহীদ বেদিতে ফুল দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।

এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনুসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানেরা, আইজিপি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও ভাষাসৈনিকরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষ হলে শহীদ মিনার সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়।

একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে মধ্যরাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই হাজারো মানুষ ফুল হাতে শহীদ মিনার অভিমুখী লাইনে দাঁড়ান। ভাষাশহীদ দিবস ভাবগাম্ভীর্য ও শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে সোমবার সন্ধ্যা থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাধারণের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মিছিলে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান সালাম, রফিক, বরকত, শফিউরসহ নাম না-জানা অনেকে। এরপর বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয় তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর এক ঘোষণায় ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২১ ফেব্রুয়ারি দেশে সাধারণ ছুটির দিন। ভাষাশহীদদের স্মরণে এদিন জাতীয় পতাকা থাকবে অর্ধনমিত।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/নৃপেন/রাসেল পারভেজ/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়