ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ঈদযাত্রায় সদরঘাটে জনস্রোত

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫৪, ১৫ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঈদযাত্রায় সদরঘাটে জনস্রোত

নিজস্ব প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের পদচারণায় সদরঘাট যেন জনস্রোত। সকাল থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি লঞ্চ ছিল কাঁনায় কাঁনায় পূর্ণ। অতিরিক্ত ভিড় ও গরমে ভোগান্তি থাকলেও থেমে নেই ঈদযাত্রা।

গতকাল যারা অফিস শেষে যেতে পারেনি তারা শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা ছাড়ছে। সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৫৬টি নৌ যান টার্মিনাল ত্যাগ করেছে। যার প্রতিটিতেই ছিলো উপচেপড়া ভিড়।

যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামলাতে অনেক লঞ্চকে নির্ধারিত সময়ের আগেই টার্মিনাল ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। ছাড়ছে লঞ্চের স্পেশাল সার্ভিসও। আজ শতাধিক লঞ্চ ঢাকা ছাড়বে বলে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক (ট্রাফিক) আলমগীর কবীর বলেন, ঈদ উপলক্ষে সব সময় আমাদের অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করতে হয়। গতকাল স্পেশাল সার্ভিসসহ সর্বাধিক ১৭৩টি নৌ যান ঢাকা ছাড়ে। যাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড় সামলাতে আমাদের বেসামাল অবস্থা। ১২টার পর ভিড় একটু কমেছে। এ পর্যন্ত ৫৬টি লঞ্চ ঢাকা ছেড়েছে। টার্মিনালে নোঙর করেছে ৫০টির মতো নৌ যান। বৃহস্পতিবারের মতো আজ এতো লঞ্চ না লাগলেও ১০০ অতিক্রম করবে। আমাদের সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

লঞ্চ টার্মিনাল সূত্রে জানা যায়, অতিরিক্ত যাত্রীর কথা বিবেচনা করে এবার পাঁচটি বিশালাকার নতুন লঞ্চ নামানো হয়েছে। সেগুলোর প্রত্যেকটি প্রায় দেড় হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম। যাত্রীদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় টার্মিনালে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য ২৫০ জন নৌ পুলিশ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ১৫০ জন সদস্য, র‌্যাবের আটজন করে ১৬ জনের দুটি টিম, বিএনসিসি ক্যাডেটদের ৬০ জন সদস্য, ডিপিডিসির ৩৬ জন সদস্য কাজ করছেন। এছাড়া ৬০ জন বিএনসিসি ক্যাডেট আছেন যাত্রীদের তথ্য সহায়তার জন্য।

এছাড়া বিএনসিসি ও ডিপিডিসি সদস্যরা অসুস্থ যাত্রীদের হুইলচেয়ার বা যেভাবে প্রয়োজন সেভাবে সহায়তায় নিজেদের নিয়োজিত আছেন। যাত্রীদের চাপ বেড়ে গেলে বিভিন্ন গেট বন্ধ ও খোলার কাজও করবেন সকল নিরাপত্তা কর্মী ও ক্যাডেটরা। আর আইন অমান্যকারীদের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করতে তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা আইন বা নির্দেশ মানবেন না তাদের জেল ও জরিমানা করছে এসব কোর্ট। তবে বড় কোনো অঘটন এখন পর্যন্ত ঘটেনি বলে বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে।

ঢাকা থেকে পটুয়াখালীগামী যাত্রী রিয়াদ হোসেন জানান, বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করি। গতকাল কাজ সারতে সারতে রাত হয়ে যায়। তাই বাড়ি যেতে পারিনি। এজন্য সকাল সকাল লঞ্চঘাট আসলাম। অনেক ভিড়ে কষ্ট থাকলেও বাড়ি যাওয়ার আনন্দে সব ভুলে গেছি।

বরাবরের মতো ঈদকে ঘিরে ব্যাপকভাবে কালোবাজারে টিকিট ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেক্ষেত্রে ভাড়া দ্বিগুণ কিংবা তিন গুণ ছাড়িয়ে গেছে।

ঈদযাত্রায় এলাকা ভিত্তিক লঞ্চ ছাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে-বরিশালের লঞ্চ ছাড়ছে ১, ২ ও ৩ নম্বর গ্যাংওয়ে থেকে, হুলারহাট-ভাণ্ডারিয়াগামী লঞ্চ ৫ ও ৬ নম্বর গ্যাংওয়ে, ঝালকাঠি মাদারিপুর-৪ নম্বর গ্যাংওয়ে, রায়েন্দা, গোমা, মুলাদি, ভাষাণচর ৭ নম্বর গ্যাংওয়ে,  সবুজবাগ, আমতলী, পয়সার হাট, বরগুনা ৮ নম্বর গ্যাংওয়ে,  লালমোহন, বেতুয়া, কালাইয়া ৯ নম্বর গ্যাংওয়ে,  হাতিয়া, মাস্টার হাট, দৌলত খাঁ ১০ নম্বর গ্যাংওয়ে,  বোরহানউদ্দিন, পাতার হাট, ভোলা, ১১ নম্বর গ্যাংওয়ে,  ভোলা লেতরা, ঘোষের হাট ১২ নম্বর গ্যাংওয়ে, রাঙ্গাবালী, টরকী ১৩ নং গ্যাংওয়ে,  সুরেশ্বর, ওয়াপদা, বলার চর বালাবাজারগামী লঞ্চ ১৩ নম্বর গ্যাংওয়ে, গ্রীন লাইন (ডে সার্ভিস) চাঁপুরগামী লঞ্চ, এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) রকেট স্টিমার লালকুঠি ঘাট থেকে ছাড়ছে। এছাড়া পটুয়াখালী ও গলাচিপার লঞ্চ ওয়াইজ ঘাটের গ্যাংওয়ে থেকে ছাড়ছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জুন ২০১৮/এম এ রহমান/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়