ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ফণি’র প্রভাবে উপকূলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, আতঙ্ক

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ২ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফণি’র প্রভাবে উপকূলে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, আতঙ্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ফণি ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। এর প্রভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রার আশপাশের নদীর পানির উচ্চতা বাড়ছে। এতে আতঙ্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে উপকূলবাসীর মধ্যে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ৭ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের এমন খবরে ঘূণিঝড় সিডর এবং আইলা কবলিত খুলনার কয়রা, পাইকগাছা উপজেলা; সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি উপজেলা, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা উপজেলার লাখো লাখো মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের ছোবলে ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পদহানির আশঙ্কা করছেন অনেকে।

উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে মাইকিং করছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির (সিপিসি) কর্মীরা।

কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ১৪/১ পোল্ডারে গোলখালী গ্রামে কপোতাক্ষ নদের মোহনায় ওয়াঁপদা বেড়িবাঁধ খুবই নড়বড়ে। ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। তার উপর আসছে ঘূর্ণিঝড়। বাড়ছে কপোতাক্ষ নদের জোয়ারের পানির চাপ। কয়রা সদর ইউনিয়নের গোবরা, হরিণখোলা ও গোবরা পূর্বচক গ্রামের বাসিন্দারা রয়েছেন আতঙ্কে। তিনি জানান, উপকূলীয় উপজেলায় মাইকিং করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুক্রবার সকালে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় শুরু হতে পারে। আর শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে ‘ফণি’। ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছাস হতে পারে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার দুরুল হুদা বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি জাহাজসহ নৌযানকে সতর্কতাবস্থায় থাকার নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। বন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, খুলনার তিন উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় ১ হাজার ২৫০ জন, দাকোপে ১ হাজার ১৩৫ ও পাইকগাছায় ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র সম্ভাব্য ক্ষতি কমাতে খুলনা জেলা প্রশাসন উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খুলেছে। এর ফোন নম্বরসমূহ: খুলনা-০৪১২৮৩০০৫১; বটিয়াঘাটা-০৪০২২-৫৬০৪৯, ফুলতলা-০১৭১৬৭৭১২৮১, দাকোপ- ০৪০২৩-৫৬০৬২, ০১৯১৭১৭৩০৬৯, কয়রা- ০৪০২৬৫৬০৪৭, ০১৭০০৭১৭০০৮, ডুমুরিয়া- ০১৭৩০৯৯৬২৬৯, ০১৭১১৪৪৮৯৬১, ০৪০২৫৫৬১১, দীঘলিয়া-০৪১-৮৯০১৭৮, ০১৭১২২৫০৪৮৭, পাইকগাছা- ০৪০২৭৫৬০০১, রূপসা- ০১৭১৯৪৫৭৮০৫, ০১৭৪৭৬০৬০৬০ ও তেরখাদা- ০১৭৯৪৪৯২১৫৭, ০১৭১৭৯১৬৭৯৮।

 

 

রাইজিংবিডি/খুলনা/২ মে ২০১৯/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়