ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘দুর্নীতি-হয়রানি বন্ধে ভূমি ব্যবস্থাপনায় সংস্কার হয়েছে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩১, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘দুর্নীতি-হয়রানি বন্ধে ভূমি ব্যবস্থাপনায় সংস্কার হয়েছে’

দুর্নীতি প্রতিরোধ ও হয়রানি বন্ধে ভূমি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

‘বাংলাদেশ ল্যান্ড স্ট্যাটাস রিপোর্ট ২০১৭' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ‌্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এ সেমিনারের আয়োজন করে।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমরা এমনভাবে ভূমি ব্যবস্থাপনা সংস্কার করছি যেন সেবাগ্রহীতাদের ভূমি অফিসে যেতে না হয়। ভূমি অফিসে যত কম যেতে হবে দুর্নীতির পরিমাণ তত কম হবে। শতভাগ ডিজিটাইজেশন হয়ে গেলে আমরা তা করতে পারব। দুর্নীতি রোধ ও হয়রানি বন্ধে মূলত ভূমি ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার আনা হয়েছে।

ভূমি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা উন্নয়ন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে ই-নামজারি চালু করা হয়েছে। তবে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ডিজিটালাইজেশন সেবা প্রদানের জন্য কমপক্ষে ৫ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ভূমিবিষয়ক লেনদেনের জন্যে পেমেন্ট গেটওয়ে স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের আইন সংস্কার এবং খাস জমি দখলকে ফৌজদারি অপরাধভুক্ত করার ব্যাপারেও কাজ চলছে।

‘বাংলাদেশ ল্যান্ড স্ট্যাটাস রিপোর্ট ২০১৭'

প্রতিবেদনভিত্তিক বইটির সমন্বয়ক ও সম্পাদক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যাবর্তন আইন প্রবর্তনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

এএলআরডির চেয়ারম্যান ও ‘নিজেরা করি’ সংস্থার সমন্বয়ক খুশির কবিরের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. আবদুল হক। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৪০০ কোটি টাকার মৌজা ও প্লট-ভিত্তিক ল্যান্ড জোনিং প্রজেক্ট প্রস্তাবনা জমা দেয়া হয়েছে। প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ল্যান্ড অটোমেশন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, যা পুরো ভূমি ব্যবস্থাপনার একটি সম্পূর্ণ ডিজিটাল সল্যুশন। এছাড়া, ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি জিওড্যাটিক সার্ভে প্রকল্পের পাইলট শুরু হয়েছে, এতে ড্রোনসহ অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

সেমিনারে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিক উজ জামান এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুন নাহার। এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

ড. আবুল বারকাতের মতে, বইটিতে খাস জমি, চর, অর্পিত ও শত্রু সম্পত্তি, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জমি, ইজারাকৃত ও চুক্তিভিত্তিক কৃষি জমি, জমির উত্তরাধিকারে নারী এবং ভূমির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাপারে সুশীল সমাজ ও উন্নয়ন অংশীদারদের ভূমিকা ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা আছে। বইটি ১২ জন বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক পরিচালিত ১৪টি গবেষণাপত্রের সংকলন।

গবেষকরা ভূমি খাত সংস্কারে খাস জমি এবং চর গরিব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে বিতরণ; শত্রু এবং অর্পিত সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়া; ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের ন্যায্য স্বার্থ নিশ্চিত করা; নারীদের জমি মালিকানার অধিকার নিশ্চিত করা; বঞ্চিত জনগণের সেবা প্রদানের জন্য ভূমি আইনের ফাঁক-ফোকর বন্ধ করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জোর দিয়েছেন। ভূমি সংস্কারের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য ভূমি সংস্কার উন্নয়ন সূচকসম্বলিত ভূমি সংস্কার পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে তারা মত প্রকাশ করেন।


ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়