আজিমপুরে ডাক্তার-নার্সদের জন্য ডরমেটরি ভবন হচ্ছে
আজিমপুরে মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডাক্তার, কর্মকর্তা, সিনিয়র স্টাফ নার্স ও প্রশিক্ষণার্থীদের আবাসন সংকট দূর করতে ডরমেটরি নির্মিত হচ্ছে।
এজন্য নিজস্ব ১৬ কাঠা জায়গার ওপর ১৫ তলা বিশিষ্ট দুটি ভবন নির্মিত হবে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ঢাকার আজিপুরের মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৫৩ সালে। বর্তমানে এটি প্রজনন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। কিস্তু এখানে কর্মরত ডাক্তার, কর্মকর্তা, সিনিয়র স্টাফ নার্স ও প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য কোনো হোস্টেল ডরমেটরি স্থাপন হয়নি। এ অবস্থায় ৭৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট ডরমেটরি ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। এতে সংশ্লিষ্টদের আবাসন নিয়ে ভোগান্তি কমে আসবে।
এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পাঠানো প্রকল্প প্রস্তাবে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পিইসি সভার কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, নিয়ম অনুসারে ৫০ কোটি টাকার ওপরের প্রকল্পের জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্প প্রস্তাবের আগে সেটা করা হয়নি। এছাড়া প্রকল্পের জন্য ৭টি নতুন পদ সৃষ্টির বিষয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ বিভাগের জনবল কমিটির কোনো সুপারিশ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) যুক্ত করা হয়নি। এছাড়া প্রস্তাবিত ডিপিপিতে ভবনের ফ্লোর প্ল্যান দেখানো হলেও তা কোন ফ্লোরের তা উল্লেখ করা হয়নি।
প্রকল্পের আওতায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্যবর্ধণ ও বৃক্ষরোপনের কথা বলা হয়েছে। এই ব্যয় অনেক বেশি। যৌক্তিক পর্যায়ে ব্যয় কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের আওতায় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বাবদ ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া দুটি নলকূপ স্থাপন করতে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন একটি স্থাপনের পক্ষে মত দিয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ২২৫টি টেবিল, ২১৭টি বেড, ৪৬৮টি চেয়ার, ২৬টি সোফা, ২টি হোয়াইড বোর্ড বাব ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দাবি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাজার যাচাই করে টেকসই ফার্ণিচার কেনার কথা বলেছে কমিশন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম বলেন, প্রকল্প গ্রহণের আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়েছে। একই সঙ্গে, জনবল নিয়োগের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ পাওয়া গেছে। কিন্তু এগুলো ডিপিপিতে যুক্ত করা হয়নি। এখন করা হবে। এই ডরমেটরির কাজ সম্পন্ন করা গেলে আজিপুরের মাতৃসদন ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সেবার মান আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। পরিকল্পনা কমিশন থেকে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে তা সম্পন্ন করে শিগগিরই পুনর্গঠিত ডিপিপি পাঠানো হবে।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, প্রকল্পের পুনর্গঠিত ডিপিপি পেলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হবে। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সাল নাগাদ এটি বাস্তবায়ন করবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ সামাজিক বিভাগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ রাইজিংবিডিকে বলেন, মা ও শিশু সেবার মান বাড়াতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্র্ণ। এজন্য পুনর্গঠিত ডিপিপি পাওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হবে।
ঢাকা/হাসিবুল/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন