কবে আলোর মুখ দেখবে সংশোধিত ড্যাপ?
রাজধানী ঢাকাকে বিশ্বের অন্যান্য আধুনিক শহরের মতো গড়ে তোলার লক্ষে সংশোধিত ডিটেইল এরিয়া প্লান (ড্যাপ) তৈরি করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
২০১৬ সাল থেকে ২০৩৫ সালের জন্য প্রণীত এ পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে। ২০১৭ সালে এটি প্রকাশ করার কথা থাকলেও ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এর মেয়াদ বাড়ানো হয়।
ওই সময়েও সংশোধিত ড্যাপের (২০১৬-৩৫) কাজ শেষ করতে পারেনি রাজউক। সময় বাড়ানো হয় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। কিন্তু এবারও ব্যর্থ হলো সংস্থাটি।
রাজউক সূত্র জানিয়েছে, নির্ভুল ড্যাপ প্রণয়নের জন্য রাজউক কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য দুটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। সাধারণ মানুষের, পেশাজীবী, এনজিও, পরিবেশ বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নেয়া হচ্ছে।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, কবে আলোর মুখ দেখবে সংশোধিত ডিটেইল এরিয়া প্লান বা ড্যাপ (২০১৬-৩৫)।
ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে এর আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করতে চান তারা। তবে বছর শেষ হতে আর দেড় মাস হাতে থাকায় এ নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রণয়নাধীন ড্যাপ বাস্তবসম্মত করতে আমরা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত গ্রহণ করেছি। ’
জানা গেছে, সবার মতামত নেওয়ারপর সংশোধিত ড্যাপের খসড়া (২০১৬-৩৫) চূাড়ান্ত করে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। সবার মতমতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি যাবে মন্ত্রণালয়ে। সেখান থেকে কোনো মতামত পাওয়া গেলে তা সংযোজন করা হবে। তা না হলে ড্যাপের (১৬-৩৫) গেজেট প্রকাশ করা হবে।
রাজউকের এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য ২০ বছর মেয়াদের এ পরিকল্পনা ২০৩৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
ড্যাপে ভূমি পুন:উন্নয়ন, পুনর্বিন্যাস, উন্নতি সাধন ফি, ট্রানজিট ভিত্তিক উন্নয়ন ও উন্নয়ন স্বত্ব প্রতিস্থাপন করা হবে।
রাজউক থেকে দাবি করা হচ্ছে, সংশোধিত ড্যাপ বাস্তবায়ন হলে রাজধানীর চেহারা বদলে যাবে। পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি এবং অপরিকল্পিত এলাকাগুলো নতুন করে সাজানো হবে। ভূমি পুন:উন্নয়ন করে ওই এলাকাগুলোকে বিদেশের উন্নত শহরের মতো করা হবে।
ড্যাপে ঢাকার ভূমি ব্যবহার জোনকে ১১ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কৃষি অঞ্চল, বনাঞ্চল, উন্মুক্ত জায়গা, প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা, ভারী এবং দূষণকারী শিল্প এলাকাসহ আরো পাঁচটি মিশ্র জোন রয়েছে।
গুরুত্ব পাচ্ছে শিশুরা
সংশোধিত ড্যাপে শিশুদের বিকাশে যা যা করা দরকার তা করবে রাজউক। শিশুরা কী চায় তা জানতে চেয়ে সংস্থাটি ওয়ার্কশপ ও মতবিনিময় করেছে। সেখানে বড় দাগে নিকট দূরত্বে স্কুল, খেলার মাঠ ও পার্ক, সবুজ পরিবেশ এবং নিরাপদ আবাসিক এলাকা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে শিশুরা।
এ বিষেয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান ড. সুলতান আহমেদ বলেছেন, ‘তাদের মতামতগুলো আমাদের কাছে বেশি গুরুত্ব পাবে। শিশুদের প্রস্তাব ড্যাপে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর খালি জায়গাগুলো বাণিজ্যিক কোনো কাজে বা কাউকে বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। ওইসব খালি জায়গায় সবুজ চত্বর, বিনোদন পার্ক বা অবকাশ যাপনের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
উল্লেখ্য, পরিকল্পিত, বাসযোগ্য এবং উন্নত ঢাকা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজউক সংশোধিত ড্যাপ বাস্তবায়ন করবে বলে দাবি করে আসছে।
ঢাকা/নূর/সনি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন