ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন চায় আসক

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন চায় আসক

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, হেফাজতে নির্যাতন, নারী নির্যাতন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরার সময় এ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি।

আসকের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০১৯ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ৩৮৮ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। তাই এ পর্যন্ত সংঘটিত সব গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।

গত এক বছরে দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে আসকের লিখিত প্রতিবেদন পড়ে শোনান সংগঠনটির জ‌্যেষ্ঠ উপ-পরিচালক নীনা গোস্বামী ও আবু আহমেদ ফয়জুল কবির। এর আগে উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো তুলে ধরেন সংগঠনটির নির্বাহী পরিষদের মহাসচিব তাহমিনা রহমান। পরে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা।

গত বছরের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবছরেও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের মতো ঘটনা অব্যাহত ছিল। ২০১৯ সালে গুমের অভিযোগ কিছুটা কমলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রসফায়ার, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুসহ গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধারের ঘটনা ছিল বছর জুড়ে। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী অভিযানকে কেন্দ্র করে বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা অব্যাহত ছিল। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে অনেক বাংলাদেশি নাগরিক হতাহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা অপেক্ষাকৃত কম থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল বরাবরের মতোই নাজুক। বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে ছেলেধরা গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন অনেক নিরীহ মানুষ।

মত প্রকাশের অধিকারের ক্ষেত্রেও এ বছরের চিত্র ছিল উদ্বেগজনক। মত প্রকাশ ও সভা-সমাবেশে বাধা দেয়াসহ সাংবাদিক নির্যাতনও হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকসহ অনেক সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা ও হয়রানি ছিল বছর জুড়ে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও তাদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর হয়েছে। সমতল ও পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য জাতিসত্ত্বার ওপর হামলাসহ নির্যাতন হয়েছে।

নারীর প্রতি সহিংসতা ছিল অন্যতম উদ্বেগের বিষয়। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, নির্যাতন ও হত্যার মতো ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া, শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাসহ শিশু অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বছর জুড়ে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতায় নিরাপরাধ জাহালমের কারাভোগ ও ফেনীর সংসদ সদস্য নিজাম হাজারী ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে কারাগারে প্রবেশ ও ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম দলের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনাও তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে।


ঢাকা/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়